Advertisement
E-Paper

আড়াই মাস পরে ব্যাগ পেলেন বৃদ্ধা

ঘটনাটা প্রায় আড়াই মাস আগের। ডাউন দুন এক্সপ্রেসে দাদার সঙ্গে দেরাদুন থেকে ফিরছিলেন বছর পঁয়ষট্টির দেবিকা বিশ্বাস। রামকৃষ্ণ মিশনের দীক্ষিতা দেবিকাদেবী সেখানকার দুর্গাপুজো দেখে হাতিবাগানের বাড়িতে আসছিলেন।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২২
ব্যাগ ফিরে পাওয়ার পরে দেবিকাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যাগ ফিরে পাওয়ার পরে দেবিকাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। সেই ইচ্ছার জোরেই হারিয়ে যাওয়া চারটি ব্যাগ ফেরত পেলেন এক রেলযাত্রী। তা-ও ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পরে। ঘটনাস্থল হাওড়া স্টেশন।

ঘটনাটা প্রায় আড়াই মাস আগের। ডাউন দুন এক্সপ্রেসে দাদার সঙ্গে দেরাদুন থেকে ফিরছিলেন বছর পঁয়ষট্টির দেবিকা বিশ্বাস। রামকৃষ্ণ মিশনের দীক্ষিতা দেবিকাদেবী সেখানকার দুর্গাপুজো দেখে হাতিবাগানের বাড়িতে আসছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা বিশ্বনাথ বিশ্বাস। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ভাই-বোন ছিলেন এস ১ কামরায়। দেবিকাদেবীর আসন ৯ এবং তাঁর দাদার আসন ছিল ১২ নম্বরে। বিশ্বনাথবাবু হাজারিবাগ রোড স্টেশনে নেমে যান। তার আগে ১৩ নম্বর আসনের সহযাত্রী এক ব্যক্তিকে হাওড়া স্টেশনে নেমে দেবিকাদেবীকে ট্যাক্সিতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করে যান।

রেল পুলিশকে দেবিকাদেবী জানান, ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দুন এক্সপ্রেস থামলে ওই সহযাত্রী কুলি ডেকে বৃদ্ধার চারটি ব্যাগ তাঁর ট্রলিতে তুলে নেন। অভিযোগ, এর পরেই তিনি কুলিকে নিয়ে হনহন করে হেঁটে ভিড়ে হারিয়ে যান। ঘণ্টাখানেক খুঁজে সহযাত্রীকে না পেয়ে হাওড়া জিআরপি-তে অভিযোগ জানান দেবিকাদেবী। একটি কেস করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। ভার দেওয়া হয় সাব ইনস্পেক্টর উত্তম ঘোষকে।

তদন্তে নেমে প্রথম বাধা, ওই বৃদ্ধা সহযাত্রীর নাম বলতে না পারা। তিনি শুধু তাঁর আসন নম্বরটাই বলতে পেরেছিলেন। সেই সূত্র ধরে ওই দিনের দুন এক্সপ্রেসের এস ১ কামরার সংরক্ষিত তালিকা জোগাড় করা হয়। জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম সুকুমার জানা। হাওড়া জিআরপি-র ওসি নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, ‘‘কয়লাঘাটার সদর দফতরে যোগাযোগ করি, সুকুমারবাবুর ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাওয়ার জন্য। কিন্তু তা সহজে মেলেনি। কারণ, আসন দিল্লি থেকে সংরক্ষণ হওয়ায় স্লিপ পাওয়ার কথা সেখান থেকেই।’’

রেল পুলিশ সূত্রের খবর, অবশেষে বহু চেষ্টা করে ওই ব্যক্তির সংরক্ষণের স্লিপ মেলে। সেখান থেকে পাওয়া যায় তাঁর ঠিকানা ও ফোন নম্বর। যোগাযোগ করা হয় সুকুমার জানা নামে ওই ব্যক্তির সঙ্গে।

উত্তমবাবু বলেন, ‘‘ফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি দিল্লিতে রয়েছেন। দেবিকাদেবীর ব্যাগের কথা বলা হলে তিনি জানান, সেগুলি হাওড়া স্টেশনের ক্লক রুমে রাখা রয়েছে। তার বুকিং স্লিপও রয়েছে তাঁর কাছে। কারণ, ওই দিন বৃদ্ধাকে অনেক খুঁজেও তিনি পাননি বলে জানান সুকুমারবাবু।’’

রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে ব্যাগের বুকিং স্লিপ-এর ছবি মোবাইলে পাঠান সুকুমারবাবু। তার কপি জমা দেওয়া হয় ক্লক রুমে। সেখান থেকেই মেলে খোওয়া যাওয়া চারটি ব্যাগ। খবর দেওয়া হয় বৃদ্ধাকেও।

এ দিকে, টাকা ও মূল্যবান জিনিস-সহ চারটি ব্যাগ ফেরত পেয়ে অভিভূত দেবিকাদেবী। পুলিশের এই তৎপরতায় উচ্ছ্বসিত বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ব্যাগগুলি ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ফিরে পেয়ে তাই খুব ভাল লাগছে।’’

হাওড়া স্টেশন Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy