Advertisement
E-Paper

নেশার ঠেকের প্রতিবাদ, হরিদেবপুরে ‘মার’ বৃদ্ধকে

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সুনীলবাবুর চোখের তলার হাড়ে চিড় ধরেছে। চোখের মণিতেও রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। এ দিন গিয়ে দেখা গেল, কেওড়াপুকুর বাজারের কাছে ওই ঘরটিতেই বসে কাজ করছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪১
প্রহৃত: সুনীল গুহ

প্রহৃত: সুনীল গুহ

নেশার আসরের প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের হাতে এক বৃদ্ধের প্রহৃত হওয়ার অভিযোগ উঠল। শুক্রবার, হরিদেবপুর থানা এলাকার কেওড়াপুকুরের ঘটনা। অভিযোগ, মারধরের জেরে বৃদ্ধের চোখের তলার হাড়ে চিড় ধরলেও রবিবার রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা অধরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সুনীল গুহ নামে একাত্তর বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দা। কেওড়াপুকুর বাজারের কাছে তাঁর একটি ভাড়ার ঘর রয়েছে। সাহিত্যচর্চার সুবাদে সুনীলবাবু এলাকায় পরিচিত। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি কেওড়াপুকুর বাজারের কাছে ওই ঘরে ছিলেন। সে সময় এক দল যুবক হঠাৎ এসে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে ঘরের ভিতরে ঢোকে। অভিযোগ, তার পর তাদেরই এক জন বৃদ্ধের হাতে থাকা লাঠি নিয়েই তাঁকে মারতে শুরু করে। লাঠির ঘায়ে সুনীলবাবুর চোখের তলায় আঘাত লাগে। সুনীলবাবু লুটিয়ে পড়লে যুবকেরা পালিয়ে যায়।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সুনীলবাবুর চোখের তলার হাড়ে চিড় ধরেছে। চোখের মণিতেও রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। এ দিন গিয়ে দেখা গেল, কেওড়াপুকুর বাজারের কাছে ওই ঘরটিতেই বসে কাজ করছেন তিনি। চোখের তলায় ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে।

কিন্তু ওই যুবকেরা ক্ষমা চাওয়ার অছিলায় ঢুকল কেন? কেনই বা বৃদ্ধকে এমন নির্মম ভাবে পেটানো হল?

সুনীলবাবুর অভিযোগ, কেওড়াপুকুরে তাঁর ঘরের সামনেই একটি পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে। সেখানে এলাকার কিছু দুষ্কৃতী নিয়মিত মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর বসায়। তিনি এ সবের প্রতিবাদ করেছিলেন। দিন কয়েক আগে এক দুষ্কৃতীকে ধরিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, তার প্রতিশোধ নিতেই এই হামলা। সুনীলবাবুকে সমর্থন করেছেন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে। তাঁরাও বলছেন, ওই এলাকায় দুষ্কৃতীরা নিয়মিত নেশার আসর বসায়। মহিলাদের উদ্দেশে কটূক্তিও করে। প্রতিবাদ করেছিলেন বলেই এমন খেসারত দিতে হল সুনীলবাবুকে। পুলিশ সূত্রের খবর, সঞ্জীব বাগ নামে এক দুষ্কৃতী এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত।

কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তাও বলছেন, সুনীলবাবুর অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে। এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা কেন? ওই পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই সে বেপাত্তা। তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে।’’ এলাকার মানুষের একাংশ অবশ্য এই ঘটনার পর হরিদেবপুর থানার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কী ভাবে এলাকায় নিয়মিত মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর বসলেও থানা খবর পেল না? এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে নজরদারির ফাঁকের অভিযোগ। বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, থানার নজরদারিতে ফাঁক রয়েছে। তার ফলেই দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বাড়ছে। কয়েক বছর আগে কবরডাঙার একটি পানশালায় প্রকাশ্যেই গুলিযুদ্ধ হয়েছিল দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে। সে সময়েও হরিদেবপুর থানার বিরুদ্ধে নজরদারিতে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘নজরদারি নিয়মিত চলে। তা আরও জোরালো করতে বলা হয়েছে।’’

Crime Drug Addiction Miscreants Drug Criminal হরিদেবপুর সুনীল গুহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy