Advertisement
E-Paper

বাইক নিয়ে রেষারেষি ফের কাড়ল প্রাণ

দু’মাসের ব্যবধানে দু’ বার ‘সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচার চলেছে এলাকায়। তা সত্ত্বেও বাইক আরোহীদের একাংশের যে এখনও হুঁশ ফেরেনি, শনিবার রাতে ফের তার প্রমাণ মিলল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫৩

দু’মাসের ব্যবধানে দু’ বার ‘সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচার চলেছে এলাকায়। তা সত্ত্বেও বাইক আরোহীদের একাংশের যে এখনও হুঁশ ফেরেনি, শনিবার রাতে ফের তার প্রমাণ মিলল। বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে শনিবার রাতে বারুইপুর-আমতলা রোডে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল এক যুবকের। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন নিহত যুবকের সহকর্মী।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনা ঘটে। দু’টি মোটরবাইকে চার জন ছিলেন। দু’টি বাইকের মধ্যে রেষারেষি চলছিল। একে অন্যকে টপকে এগিয়ে যেতে গিয়ে একটি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি বন্ধ চায়ের দোকানে ধাক্কা মারে। বাইকের চালক অশোক খাঁ (৩০) ঘটনাস্থলেই মারা যান। অশোকের পিছনের আসনে বসা তাঁর সহকর্মী শ্যামল পাল গুরুতর জখম অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু’টি বাইকের আরোহীদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

বারুইপুর আমতলা রোডের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই এলাকায় সম্প্রতি দু’ বার ‘সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফ’ নিয়ে সচেতনতা পদযাত্রা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ওই এলাকায় অধিকাংশ মোটরবাইক আরোহী মাথায় হেলমেট ব্যবহার করেন না বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানায়, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী অশোক বিষ্ণুপুর থানার মীরপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। সহকর্মীকে বাইকের পিছনের আসনে বসিয়ে তিনি শনিবার রাতে বারুইপুরের দিক থেকে আমতলার দিকে যাচ্ছিলেন। জুলপিয়ার মোড়ের কাছে দুই সওয়ারির অন্য একটি মোটরবাইক অশোকদের বাইকটি টপকে এগিয়ে যায়। তার পরেই অশোক রেষারেষি শুরু করেন। জুলপিয়া থেকে মৌদি— প্রায় চার কিলোমিটার দু’টি বাইকের মধ্যে রেষারেষি চলে। কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই রাস্তায় বাস ও অটো চলাচল করছিল। তা সত্ত্বেও সতর্ক হননি দু’টি বাইকের চার আরোহী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বিকট শব্দ হয়। ইট ও সিমেন্টের গাঁথনি ভেঙে হুড়মুড়িয়ে অশোকদের বাইকটি ঢুকে পড়ে চায়ের দোকানের ভিতরে। অন্য মোটরবাইকটি তীব্র গতিতে পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। আর্তনাদ শুনতে পেয়ে দোকানের ভিতরে ঢুকে স্থানীয় লোকজন দেখেন, এক জনের চেহারা প্রায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। আরেক জন যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা দু’জনকেই উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর থানায় খবর দেন। দু’জন জখমকে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা অশোককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অশোকের সহকর্মী শ্যামলকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর মাথা ও কোমড়ে গুরুতর চোট রয়েছে। ডান পা ও বাম হাত ভেঙে গিয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

পুলিশ জানায়, যে বাইকটির সঙ্গে অশোক রেষারেষি করছিলেন সেটিরও খোঁজ চলছে। ওই বাইকটি অশোকদের পরিচিত কারও বলেই পুলিশ মনে করছে। আহত শ্যামল সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁর কাছে এ নিয়ে বিশদে জানতে চাইবে পুলিশ।

এক অটোচালকের কথায়, ‘‘ওই রাস্তায় নানা মোড়ে বাঁক রয়েছে। সেখানে বেশি জোরে গাড়ি চালানো বিপজ্জনক। রাস্তা কোনও কোনও জায়গায় আলো পর্যন্ত নেই। তা সত্ত্বেও বাইক দু’টি তীব্র গতিতে ছুটছিল।’’

ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ জানায়, ওই রাস্তায় নিয়মিত টহলদারি থাকে। প্রায় প্রতিদিনই হেলমেট বিহীন আরোহীদের ধরা হয়। জরিমানাও করা হয়। ওই দিনের ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Death Accident Bike Injury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy