Advertisement
E-Paper

বাজিতে জখম একটি শিশুর মৃত্যু এসএসকেএমে

বিস্ফোরণে আহত হয়েছে শাহনওয়াজ মল্লিক নামে আরও একটি শিশু। নাদিয়াল থানার পুলিশ এই ঘটনায় নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৫৭
সন্তানহারা: আমির আলির (ডান দিকে) মৃত্যুর খবরে শোকাহত মা নুর মদিনা বিবি। বৃহস্পতিবার, নাদিয়ালে। নিজস্ব চিত্র

সন্তানহারা: আমির আলির (ডান দিকে) মৃত্যুর খবরে শোকাহত মা নুর মদিনা বিবি। বৃহস্পতিবার, নাদিয়ালে। নিজস্ব চিত্র

বন্দর এলাকার নাদিয়ালে বাজি বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে আমির আলি নামে আট বছরের ওই ছেলেটি মারা যায়।

বিস্ফোরণে আহত হয়েছে শাহনওয়াজ মল্লিক নামে আরও একটি শিশু। নাদিয়াল থানার পুলিশ এই ঘটনায় নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দিনভর নাদিয়ালের খালধারি রোডের মল্লিকপাড়ায় একটি ছোট্ট মাঠে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা চলে। তার পরে রাতে প্রচুর আতসবাজি ফাটানো হয়। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দা আমির আলি, শাহনওয়াজ মল্লিক-সহ জনা দশেক শিশু পোড়া বাজির স্তূপে খেলছিল। স্থানীয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শাহনওয়াজ বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে বসে বলল, ‘‘আমি আর আমির ওই জায়গায় বল ভেবে একটি জিনিস কুড়োতে গিয়েছিলাম। বলের মতো ওই জিনিসটায় আমির হাত দিতেই সেটি প্রবল আওয়াজে ফেটে যায়। তার পরে আমার কোনও
জ্ঞান ছিল না।’’

বুধবার ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন শাহনওয়াজের বাবা শাহজাহান মল্লিক। তাঁর কথায়, ‘‘আওয়াজ শুনেই ছুটে গিয়ে দেখি, ছেলে মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছে। ওর কান, মাথা দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে ওকে কোলে করে গাড়িতে তুলে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণে গুরুতর চোট পায় আমির আলি। তার পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গিয়েছিল। ওই অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে আর একটি গাড়িতে চাপিয়ে এসএসকেএমে নিয়ে যান। বুধবার বিকেলের দিকে শাহনওয়াজকে হাসপাতাল ছেড়ে দিলেও রাত ১টা নাগাদ আমির মারা যায়।

আমির ছোট থেকেই নাদিয়ালে খালধারি রোডে দাদুর বাড়িতে থাকত। এ দিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সবাই শোকাচ্ছন্ন। বছর দুয়েক আগে আমিরের বাবা মারা গিয়েছেন। দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মা নুর মদিনা বিবি নাদিয়ালের কাছেই ঘর ভাড়া নিয়ে সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালান। আমির সবার ছোট ছিল। মা নুর মদিনা বিবির কথায়, ‘‘আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চাই। এই ঘটনার দায় কে নেবে?’’ মৃতের দাদু নুরুল হুদা মল্লিক বললেন, ‘‘ঘিঞ্জি এলাকায় বাজি ফাটানো বেআইনি। পুলিশ আগেই ব্যবস্থা নিলে নাতিকে অকালে হারাতে হত না।’’

ঘটনাস্থলের কাছেই বিস্ফোরণে আহত শাহনওয়াজের বাড়ি। এ দিন দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, মাথায়-কানে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শাহনওয়াজ বসে রয়েছে। তার বাবা শাহজাহান বললেন, ‘‘হাঁটাচলা করতে পারছে না। চিকিৎসকেরা পুরো বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। সাত দিন পরে ফের তাঁরা ওকে দেখবেন।’’ তাঁর আশঙ্কা, ‘‘যে ভাবে মাথায়, কানে চোট লেগেছে, তাতে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে কি না সংশয়ে রয়েছি।’’

SSKM Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy