দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। গিয়ে তারা দেখে, রাস্তার উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক তরুণ। শরীর থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে একটি হাত। কিছুটা দূরে রাস্তায় পড়ে রয়েছে তাঁর মোটরবাইক। যার সামনে পড়ে এক গুচ্ছ গোলাপ।
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের প্রমোদনগরের কাছে। পুলিশ জানায়, মৃত তরুণ সায়ন্তন সরকার (১৯) ছিলেন বরাহনগরের বসাকবাগানের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দিন বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে। নিমতার মাঠকল এলাকা থেকে ফেরার পথেই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে ওই তরুণের বাইকের দু’দিক দিয়ে দ্রুত গতিতে দু’টি লরি রেষারেষি করছিল। সায়ন্তনও বাইকের গতি বাড়িয়ে দু’টি লরিকে পার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তখনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক নিয়ে পড়ে যান তিনি। তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মাথায়, বুকে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণের।
শনিবার কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা অঙ্কুর বসাক বললেন, ‘‘খুব কষ্ট করে ছেলেটি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল। প্রমোদনগর থেকে সতীন সেন নগরে নামার রাস্তায় ঢোকার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’ এক্সপ্রেসওয়ের ওই রাস্তা দিয়ে নেমে বরাহনগরের ভিতরের এলাকা হয়ে সহজেই বসাকবাগানে পৌঁছনো যায়। সায়ন্তনের পরিজনেরা জানাচ্ছেন, কেটারিংয়ের কাজ করতেন ওই তরুণ। তা থেকে টাকা জমিয়ে মাসকয়েক আগে নিজে একটি বাইক কিনেছিলেন।
ওই দিন সকালে নিজের ও বাবার বাইক পরিষ্কার করেন সায়ন্তন। তার পরে বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বাইকের নম্বরের সূত্র ধরেই রাতে পুলিশ যোগাযোগ করে সায়ন্তনের পরিজনদের সঙ্গে। বাইকের নম্বরটি সায়ন্তনেরই জানানোর পরে পরিজনদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তাঁরা থানায় গিয়ে সায়ন্তনের দেহ শনাক্ত করেন। এই ঘটনার জেরে ওই রাতে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় যানজট হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত বাড়লেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়া ভাবে লরি চলাচল করে। তবে, শনিবার রাত পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটানো লরি দু’টির সন্ধান মেলেনি। পুলিশ খোঁজ শুরু করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)