Advertisement
E-Paper

মত্ত অবস্থায় স্টিয়ারিংয়ে বসে তিনটি গাড়িতে ধাক্কা, মৃত এক

মত্ত অবস্থায় এসইউভি-র স্টিয়ারিংয়ে বসে চালক প্রথমে সিগন্যাল ভেঙে একটি ছোট মালবাহী গাড়িতে ধাক্কা মারেন। তার পরে সেটি সজোরে ধাক্কা মারে পুলিশের একটি নজরদারি ভ্যানে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪৩
A Photograph representing a dead body

ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজাবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা কালামের। প্রতীকী ছবি।

ফুটপাতের উপরে পুরসভার লাগানো বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়ে রয়েছে। উপড়ে গিয়েছে রাস্তার নাম লেখা পুরসভার বোর্ডও। নীচে পড়ে ছটফট করছেন দু’জন। কিছুটা দূরে পড়ে থাকা এক জনের সাড়াশব্দ নেই। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আশপাশ। ইতিউতি ছড়িয়ে ভাঙা কাচ। কিছুটা দূরেই পরপর দাঁড়িয়ে দুমড়ে যাওয়া একটি ছোট মালবাহী গাড়ি, একটি এসইউভি এবং পুলিশের নজরদারি ভ্যান। রাস্তায় পড়ে আছে একটি মোটরবাইকও!

মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ ও বিডন স্ট্রিট মোড়ের দৃশ্যটা ছিল এমনই। পুলিশ সূত্রের খবর, মত্ত অবস্থায় এসইউভি-র স্টিয়ারিংয়ে বসে চালক প্রথমে সিগন্যাল ভেঙে একটি ছোট মালবাহী গাড়িতে ধাক্কা মারেন। তার পরে সেটি সজোরে ধাক্কা মারে পুলিশের একটি নজরদারি ভ্যানে। ধাক্কা লাগে একটি মোটরবাইকের সঙ্গেও। এই ঘটনায় মালবাহী গাড়িটির তিন জন আরোহী রাস্তায় ছিটকে পড়েন। মোটরবাইকের চালক-সহ আহত হন মোট ছ’জন। সকলকেই দ্রুত উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মালবাহী গাড়ির এক আরোহী, কালাম মোল্লাকে (৪৫) মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজাবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা কালামের। আহতদের মধ্যে ফরদিম মোল্লা এবং এক্রামুল মোল্লা নামে দু’জনকে পরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মালবাহী গাড়িটিতে কাপড়ের বস্তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এসইউভি-টি চালাচ্ছিলেন শুভজিৎ মহাপাত্র নামে বছর ছাব্বিশের এক যুবক। মুচিপাড়া থানা এলাকার সুরেন্দ্রলাল পাইন লেনে তাঁর বাড়ি। গাড়িতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুরজিৎ রাউত নামে এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, শুভজিৎ এতটাই মত্ত অবস্থায় ছিলেন যে, ভাল করে তাকানোরও ক্ষমতা ছিল না। পরীক্ষায় পুলিশ দেখেছে, তাঁর শরীরে প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে ৩০১.৬ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী, কারও শরীরে প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে ৩০ মিলিগ্রামের বেশি অ্যালকোহল জমলেই তিনি গাড়ি চালানোর পক্ষে অনুপযুক্ত। কলকাতা পুলিশও এই বিধি মেনে মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ওই অবস্থায় কোথা থেকে গাড়ি চালিয়ে অভিযুক্ত যুবক আসছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ঘটনাস্থলের পাশেই ফুটপাতে রাতে ঘুমোন রীতেশ রাঠি। বছর কুড়ির ওই তরুণ বুধবার বলেন, ‘‘মাঝরাতে হঠাৎ জোর আওয়াজ। তাতেই আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। গিরিশ পার্ক মোড়ের কাছে হাট বসে। হাটের লোকজন ও আমরা সকলে বিডন স্ট্রিটের দিকে ছুটি। রাস্তায় যে ভাবে লোকজন পড়ে ছটফট করছিলেন আর আশপাশ রক্ত ভেসে যাচ্ছিল, তাতে শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। পুলিশ কোনও মতে তাঁদের তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’

ঘটনাস্থল বড়তলা থানার অন্তর্গত। ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে কলকাতা পুলিশের ফেটাল স্কোয়াড। এ দিন দুপুরে বড়তলা থানার কাছে গিয়ে দেখা গেল, দুর্ঘটনায় পড়া গাড়িগুলিকে পরীক্ষাকরছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘অত্যন্ত দ্রুত গতিতে না ছুটলে এমনটা ঘটে না। যেখানে যেখানে লেগেছে, দুমড়ে গিয়েছে। গাড়ির গতি ঠিক কত ছিল, দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শুভজিৎকে আদালতে তোলা হলে আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Road Accident Drunk Driving police investigation Dead
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy