প্রতীকী চিত্র।
বাড়িতে বসেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে আরও ভাল ভাবে পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। ওই দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এত দিন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা ফোনে শিক্ষকদের কাছে পড়া বুঝে নেওয়ার সুবিধা পাচ্ছিল। এ বার এই সুবিধা ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাও যাতে পায়, তার পরিকল্পনা চলছে। সেই সঙ্গে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’-এর উপরেও তৈরি হচ্ছে একটি বই বা ‘অ্যাক্টিভিটি ব্যাঙ্ক’।
দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুললেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের একাংশ জানিয়েছেন, বেশ কিছু স্কুলে অনলাইন ক্লাস পর্যাপ্ত সংখ্যায় হয়নি। ওই পড়ুয়াদের এখন ভরসা মিড-ডে মিলের সামগ্রীর সঙ্গে দেওয়া ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’। বেশ কয়েকটি স্কুল জানাচ্ছে, জুন মাস থেকেই মিড ডে মিলের সঙ্গে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার কথা বলেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা মঙ্গলবার বলেন, “জুন মাস থেকে মিড ডে মিলের সঙ্গে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এবার শুধু মিড-ডে মিলের সঙ্গে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়াই নয়, আমরা পরিকল্পনা করেছি, অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উপরে যদি একটি বই বা অ্যাক্টিভিটি ব্যাঙ্ক তৈরি করা যায় এবং সেই বই পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তা হলে তাদের আরও সুবিধা হবে। তা হলে আর মিড-ডে মিলের সঙ্গে বার বার অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নিতে হবে না অভিভাবকদের। পড়ুয়ারা অ্যাক্টিভিটি টাস্কের বই দেখেই তার সমাধান করে ফেলতে পারবে। তার পরে তা অভিভাবকদের মাধ্যমে শিক্ষকদের দেখিয়ে নিলেই হবে।”
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা অনেকেই টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে পড়া বুঝে নিয়েছে। এতে অনেকেই উপকৃত হয়েছে। এ বার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যও ফোনে পাঠদানের সুবিধা চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।
কী ভাবে হবে এই পাঠদান? প্রথমে নির্দিষ্ট টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করতে হবে। ফোন করলেই জিজ্ঞাসা করা হবে, ওই পড়ুয়া কী বিষয়ে জানতে চায়। যে বিষয় সম্পর্কে সে জানতে চায়, সেটির জন্য একটি নির্দিষ্ট নম্বর টিপতে হবে। আর তা করলেই পাওয়া যাবে শিক্ষককে।
ধরা যাক, কোনও পড়ুয়া একটি ইংরেজি কবিতা বুঝতে চাইছে। তখন তাকে হয়তো ইংরেজির জন্য ৩ টিপতে বলা হল। সে ৩ ডায়াল করতেই অন্য প্রান্তে থাকা ইংরেজির শিক্ষক ফোন ধরে তাকে পড়া বুঝিয়ে দিলেন।
তবে অভিযোগ, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ফোনে পাঠদানের এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও বহু সময়েই শিক্ষকদের ফোন করেও পাওয়া যায় না। ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “গত বছর অগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাজ্য জুড়ে বহু শিক্ষককে ফোনে পাঠদানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তবে যত শিক্ষকের প্রশিক্ষণ সে সময়ে হয়েছিল, তত শিক্ষককে ব্যবহার করা হয়নি। যার ফলে নবম থেকে দ্বাদশের ক্ষেত্রে ফোনে পাঠদানের প্রক্রিয়া খুব একটা সফল হয়েছে বলে মনে করি না। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফোনে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হলে শিক্ষকদের যেন ঠিক মতো ব্যবহার করা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy