সিঁথি থানায় তখন হাজির আশপাশের অন্তত তিন থানার ওসি। রয়েছেন বিভাগীয় ডেপুটি কমিশনার থেকে শুরু করে যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরা। তার মধ্যেই গোটা থানা চত্বর দু’টি রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের দখলে চলে গেল। সোমবার রাতে পুলিশের সামনেই থানার মধ্যে মারামারি-ভাঙচুর চালালেন শাসক তৃণমূল এবং বিজেপির সদস্যরা। কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ। পুলিশেরই একটি অংশের দাবি, প্রথম থেকেই পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ তাঁদের সহকর্মীদের একাংশ।
একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের ঘরে রাখা শৌচাগারের কল, পাইপ এবং বিভিন্ন ধরনের ‘বাথরুম ফিটিংস’-সহ মার্বেল পালিশ করার ৮টি বিভিন্ন মাপের মেশিন চুরির তদন্তকে কেন্দ্র করেই সোমবার জেরার জন্য ডাকা হয়েছিল ৫৪ বছরের রাজকুমার সাউকে। পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই মৃতের আত্মীয় এবং উত্তেজিত জনতা সোমবার সন্ধ্যাতেই এক দফা ভাঙচুর করে থানার ভিতরে। সেই সময়ে পুলিশ কোনও মতে মারমুখী জনতাকে থানা চত্বরের বাইরে বের করে তালা দিয়ে দেয় মূল ফটকে। সেই সময়ে বাইরে চলছিল বিক্ষোভ। তার মধ্যেই রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থলে হাজির হন সিঁথি চত্বরের এক বিজেপি নেতা। তিনি দাবি করেন, মৃত ব্যক্তি তাঁদের দলের সদস্য। যদিও রাজকুমার সাউয়ের দুই ছেলে অজয়-বিজয় এবং ভাই রাকেশ দাবি করেছেন যে, রাজকুমার কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
বিজেপির ওই নেতা পুলিশ কর্মীদের নিজের পরিচয় দিয়ে ঢুকে যান থানা চত্বরে। তার খানিক পরেই থানায় হাজির হন ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সৃজন বসু। এলাকায় তিনি কাউন্সিলর এবং রাজ্য সভার সাংসদ শান্তনু সেনের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। রাত ১০টার পর থেকেই থানা চত্বরে ভিড় বাড়তে থাকে দুই দলের কর্মী নেতাদের। সাধারণ মানুষকে থানায় ঢুকতে না দিলেও, এঁরা থানায় ঢুকতে কোনও বাধা পাননি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, রাত ১১টা নাগাদ থানায় পৌঁছন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গৌতম হালদার। তিনি থানায় ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই থানা চত্বরের মধ্যে শুরু হয়ে যায় দুই দলের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি। ইতিমধ্যে চলে আসেন তৃণমূলের আরও এক কাউন্সিলর পুষ্পালি সিংহ। দলবল নিয়ে পৌঁছন বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলার সভাপতি দীনেশ পাণ্ডে।