Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
school

School: প্রতিষেধক পাক পড়ুয়ারা, দাবি স্কুল খোলার আগে

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুজোর পরে স্কুল খোলা যায় কি না, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩৭
Share: Save:

পুজোর পরে স্কুল-কলেজ খুলতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসনের কাছ থেকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলে অভিভাবকেরা কি নিশ্চিন্ত হতে পারবেন সন্তানের সুরক্ষা নিয়ে? শহরের বেশ কিছু স্কুল অবশ্য মনে করছে, আপাতত পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়াটাই একমাত্র পথ। তা হলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হতে পারবেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। মা-বাবাদেরও অধিকাংশের তেমনটাই মত।

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুজোর পরে স্কুল খোলা যায় কি না, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, করোনা-বিধি মেনে ক্লাসরুমে পড়াশোনা শুরু হোক, তাঁরাও চান। কিন্তু অভিভাবকদের অনেকেই তাঁদের জানিয়েছেন, সন্তান প্রতিষেধক পেলে তবেই তাঁরা কিছুটা চিন্তামুক্ত হয়ে তাকে স্কুলে পাঠাতে পারবেন। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার মায়ের কথায়, ‘‘এত ছোট বাচ্চাকে কি প্রতিষেধক দেওয়া হবে? না হলে কোন ভরসায় স্কুলে পাঠাব?’’

শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের মতে, এখন বেড়াতে গেলেও বহু জায়গায় প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র রাখাটা বাধ্যতামূলক। স্কুলেও এমন বিধি চালু করা উচিত। তাঁর প্রশ্ন, যে পড়ুয়ারা গণপরিবহণে আসবে, তারা কি আদৌ নিরাপদ থাকবে? তবে প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়াই যায়। ব্রততী বলেন, ‘‘আমরা চাই, স্কুল খুলুক। কিন্তু প্রতিষেধক নিয়ে তবেই সকলে স্কুলে আসুক।’’

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বললেন, ‘‘সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ বছরের কম বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়া হতে পারে বলে শুনেছি। নভেম্বরে যদি স্কুল খোলে, তা হলে তার আগে পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়াটা জরুরি।’’ একই মত মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ অঞ্জনা সাহারও। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা বিভিন্ন জায়গা থেকে স্কুলে আসে। প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি মা-বাবারাও খানিকটা নিশ্চিন্তে থাকবেন।’’ যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সম্প্রতি জানিয়েছে, স্কুলে যাওয়ার জন্য শিশু ও কিশোরদের প্রতিষেধক নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল যদি পুজোর পরে খোলে, তা হলে প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে দু’টি ডোজ় নিয়ে ফেলতে হবে। আমরা নোটিস দিয়ে তা জানিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই, অন্তত ১২ থেকে ১৮ বছরের সব পড়ুয়াকে প্রতিষেধক দেওয়া হোক।’’ সুজয়বাবুর মতে, পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে পড়ুয়াদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হলে স্কুল খোলার আগে প্রত্যেকেই অন্তত একটি করে ডোজ় পেয়ে যাবে। একই বক্তব্য ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষ মৌসুমী সাহার। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল তো করোনা-বিধি মেনে চলবেই। আরও বেশি নিশ্চিন্ত হতে প্রতিষেধক নেওয়াটাও খুব জরুরি।’’

স্কুলের ক্লাসরুমে পড়াশোনা শুরু হওয়াটা খুব জরুরি বলে মনে করছে ‘ইন্ডিয়ান সাইকায়াট্রিক সোসাইটি’ও। ওই সংস্থার সর্বভারতীয় সভাপতি গৌতম সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন বাড়িতে থাকার ফলে পড়ুয়াদের শুধু মানসিক সমস্যাই নয়, নানা শারীরিক সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। স্কুল খোলার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছি। চিঠি দিয়েছি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE