Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাজনীতি কেন, পথ রুখলেন বাবা-মায়েরাই

অভিভাবকদের ক্ষোভ সামনে এসেছে সোমবার জি ডি বিড়লা স্কুলে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের যাওয়ার ঘটনায়। অভিভাবক, প্রাক্তনী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলাকালীন এ দিন রূপা স্কুলের গেট পেরিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রথমে বাধা দেন পুলিশকর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

ঘোলা জলে রাজনীতিকেরা মাছ ধরবেন, চান না অভিভাবকেরা। তাঁদের কাছে শিশুদের ‘নিরাপত্তা’র দাবিই অগ্রাধিকার। তাই জি ডি বিড়লা বা এম পি বিড়লা স্কুলে রাজনীতিকদের উপস্থিতিকে মেনে নিতে নারাজ তাঁরা। তাঁদের সাফ কথা, ‘‘আমরা বাচ্চাদের বাবা-মা। কোনও রং চাই না। চাই শুধু বাচ্চাদের নিরাপত্তা।’’

অভিভাবকদের ক্ষোভ সামনে এসেছে সোমবার জি ডি বিড়লা স্কুলে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের যাওয়ার ঘটনায়। অভিভাবক, প্রাক্তনী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলাকালীন এ দিন রূপা স্কুলের গেট পেরিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রথমে বাধা দেন পুলিশকর্মীরা। গেটের মাঝখানে তাঁর হাত-পা আটকে রয়েছে বলে বারবার চিৎকার করতে থাকেন রূপা। ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন অভিভাবকেরাও। শেষমেশ পুলিশ ও অভিভাবকদের প্রবল বাধায় স্কুল-চত্বর ছেড়ে চলে যান তিনি।

কেন রূপার মতো রাজনীতিকেরা স্কুল-চত্বরে এসে ‘প্রভাব’ খাটানোর চেষ্টা করছেন, তা নিয়ে বারবারই অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকেরা। তাঁরা বলতে থাকেন, ‘‘যিনি এসেছেন তিনি স্বাগতও নন, গো-ব্যাকও নন। তবে কোনও রং আমরা চাই না। রাজনীতিমুক্ত থাকতে চাই আমরা।’’ যদিও নির্যাতিত শিশুর পরিবারের তরফে মামলায় আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা তিবরেবাল পেশার বাইরে বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সহ-সভানেত্রী।

রূপার অবশ্য দাবি, সন্তানের মা হিসাবেই তিনি স্কুলের অভিভাবকদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। অভিভাবকদের বাধা পেয়ে তাঁর পাল্টা ক্ষোভ, ‘‘ওঁরা কি বাচ্চার মা! যা ব্যবহার করছেন ওঁরা! আমি এই এলাকায় বড় হয়েছি। ঘটনাটা শোনার পর থেকে ঘুমোতে পারিনি। তাই এসেছিলাম।’’ বিক্ষোভকারীদের আবার যুক্তি, অভিভাবক আর স্কুল-কর্তৃপক্ষের মাঝে রাজনীতিকদের কোনও ‘হস্তক্ষেপ’ তাঁদের নিষ্প্রয়োজন।

শিশু-নিগ্রহের অভিযোগকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে রাজনীতিকদের আনাগোনা অবশ্য এ দিনই প্রথম নয়। নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই গত শনিবার শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। গিয়েছিলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীও। লকেট বলেছিলেন, এক জন মহিলা হিসাবেই শিশু ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। সুজনবাবুর যুক্তি, ‘‘রাজনীতি করতে চাইলে স্কুলের গেটে ঝান্ডা নিয়ে যেতে পারতাম! তা তো করিনি! এক জন সহ-নাগরিক হিসাবে পরিবারটির পাশে থাকতে চেয়েছি।’’

অন্য দিকে, এম পি বিড়লা স্কুলে তিন মাস আগের একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে দিনভর যে বিক্ষোভ চলেছে, সেখানেও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরকে দেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। সন্ধ্যায় পুলিশ অভিভাবকদের উপরে লাঠি চালানোর পরে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার নিন্দা কিন্তু করেছে সিপিএম, এসইউসি, পিডিএসের মতো সব রাজনৈতিক দলই!

কলকাতার আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন আনন্দবাজারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE