Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেঘলা আকাশ, উৎসাহী-চোখ তবু টেলিস্কোপে

শুধু টেলিস্কোপই নয়। দেশের অন্য জায়গা থেকে কী ভাবে দৃশ্যমান হয়েছে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ, তা-ও দেখানো হয় বড় প্রোজেক্টরে।

বিরল: (১) বিআইটিএমে টেলিস্কোপের মাধ্যমে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখার চেষ্টা খুদেদের।

বিরল: (১) বিআইটিএমে টেলিস্কোপের মাধ্যমে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখার চেষ্টা খুদেদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। সূর্য উঁকি মারছে কখনও সখনও। বৃহস্পতিবার সকালে আকাশের মুখ দেখেই শহরবাসী বুঝে গিয়েছিলেন, ঝলমলে আকাশে সূর্যগ্রহণ দেখার আশা প্রায় নেই। তবু উৎসাহে ভাটা পড়েনি। অনেকেই চোখ রাখলেন টেলিস্কোপে। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ামে (বিআইটিএম) টেলিস্কোপ দিয়ে গ্রহণ দেখতে ভিড় জমল সকাল সাড়ে সাতটা থেকে।

টেলিস্কোপ দিয়ে গ্রহণ দেখার আশায় বিআইটিএমে সকাল সকালই মা শ্রুতি জৈনের সঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরহন জৈন। শ্রুতি বললেন, ‘‘সকালে মেঘ দেখে ছেলের মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তবু মেঘ সরলে যদি গ্রহণ দেখা যায়, এই আশায় চলে এসেছিলাম ছেলেকে নিয়ে।’’ পুরোপুরি হতাশ অবশ্য হতে হয়নি আরহনকে। তার কথায়, ‘‘সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ফিল্টার দেওয়া টেলিস্কোপে সূর্যগ্রহণ দেখতে পেয়েছি। দারুণ লাগল।’’ ডিপিএস রুবি পার্কের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রুসান বসু বলে, ‘‘ভেবেছিলাম মেঘের জন্য দেখতে পাব না। কিন্তু ১১টা নাগাদ মেঘ কেটে গিয়ে কিছু ক্ষণের জন্য সূর্যের দেখা মিলেছিল। তখন গ্রহণ দেখেছি। তবে সে সময়ে চোখে ফিল্টার চশমা পরেছিলাম। আমাদের বলে দেওয়া হয়েছিল যে, ফিল্টার লাগানো চশমা না পরলে চোখের ক্ষতি হতে পারে।’’

বিআইটিএমের টেকনিক্যাল অফিসার গৌতম শীল এ দিন বলেন, ‘‘অভিভাবক ও ছাত্র মিলে এক হাজারেরও কিছু বেশি মানুষ আজ এখানে সূর্যগ্রহণ দেখেছেন। তিনটে টেলিস্কোপের সাহায্যে দেখানো হয়েছে সূর্যগ্রহণ। এ ছাড়া সাদা বোর্ডের উপরে সূর্যের ছায়া ফেলেও গ্রহণ দেখানো হয়েছে।’’

শুধু টেলিস্কোপই নয়। দেশের অন্য জায়গা থেকে কী ভাবে দৃশ্যমান হয়েছে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ, তা-ও দেখানো হয় বড় প্রোজেক্টরে। বিআইটিএমের অধিকর্তা ভিএস রামচন্দ্রন বলেন, ‘‘প্রোজেক্টরে সূর্যগ্রহণ দেখার উৎসাহও ছিল খুব বেশি। কলকাতার আকাশে যখন মেঘ, তখন পড়ুয়ারা অন্য জায়গার গ্রহণের দৃশ্য দেখার জন্য চোখ রেখেছিল ওই প্রোজেক্টরেই। এ ছাড়া গ্রহণ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য হাজির ছিলেন বিশেষজ্ঞরাও।’’ রামচন্দ্রন আরও জানান, খালি চোখে গ্রহণ না দেখার জন্য বারবার উৎসাহীদের সচেতন করেছেন তাঁরা। এ জন্য উৎসাহীদের ফিল্টার চশমাও দেওয়া হয়।

গৌতমবাবু জানান, কলকাতার আকাশে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত সূর্যগ্রহণ হয়েছে। শহরের আকাশ থেকে বলয়গ্রাস গ্রহণের মাত্র ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত দেখতে পাওয়ার কথা ছিল। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘এই ৪৫ শতাংশ বলয়গ্রাস দেখা কথা ছিল সকাল ৯টা বেজে ৫২ মিনিটে। কিন্তু মেঘের জন্য ৯টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত আকাশে সূর্য দেখা গিয়েছে। সে সময়ে ৩৭ শতাংশের মতো গ্রহণ দেখা গিয়েছে। তাতেই অবশ্য সবাই খুশি। বিশেষত ছোট ছেলেমেয়েরা।’’ সকাল ১১টার পরে মেঘ কেটে গেলে ফের সূর্যের মুখ দেখেছেন শহরবাসী। তখন ফের টেলিস্কোপে চোখ রাখেন উৎসাহীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Solar Eclipse Weather Cloudy Sky
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE