ফাইল চিত্র।
তিনি বিমানে কত বার যে চড়েছেন, গুনে শেষ করতে পারবেন না। কিন্তু রবিবার আমেরিকার নেওয়ার্ক থেকে কলকাতা আসতে গিয়ে ৩০ ঘণ্টার যাত্রায় যে অভিজ্ঞতা হল, তা বাকি জীবনটা মনে রাখবেন ৫০ বছরের দেবাশিস রায়।
পরপর ঘটনার ঘনঘটা, হেনস্থা এবং শেষে কলকাতায় এসে মালপত্র না পাওয়া, সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন অনাবাসী এই ইঞ্জিনিয়ার।
নেওয়ার্ক থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার সরাসরি উড়ান রয়েছে মুম্বই পর্যন্ত। দেবাশিসবাবুর মুম্বই হয়ে কলকাতায় আসার কথা ছিল। কিন্তু জানা যায়, কলকাতার বিমান ধরার জন্য তাঁকে মুম্বইয়ে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। তাই উড়ান সংস্থাই তাঁকে মুম্বই থেকে দিল্লি ঘুরে কলকাতায় আসার টিকিট দেয়। দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর ১টায় মুম্বইয়ে নেমে নিজের দু’টি ব্যাগ উড়ান সংস্থার কর্মীদের হাতে তুলে দেন তিনি। দেবাশিসবাবুর বিমানেই সেই ব্যাগ দু’টি দিল্লি হয়ে কলকাতায় আসার কথা।
দেবাশিসবাবুর অভিযোগ, ‘‘মুম্বইয়ে জানতে পারি, সৌদি আরব থেকে একটি বিমান নিয়ে যে পাইলট আসবেন, তিনিই দিল্লির বিমান চালাবেন। নির্ধারিত সময় ৪টের থেকে সওয়া দু’ঘণ্টা দেরিতে সেই উড়ান ছাড়ে। দেরি দেখে মুম্বইয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসারকে বলেছিলাম, দেরিই যখন হচ্ছে, তখন আমাকে সরাসরি কলকাতার বিমানে তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু অনুরোধে লাভ হয়নি। দিল্লিতে নামি রাত ৮টায়। অন্য টার্মিনাল থেকে ৮টা ৪০ মিনিটে আমার কলকাতার উড়ান ছাড়ার কথা ছিল।’’
ওই সময়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এক অফিসার তাঁকে কলকাতার উড়ান ধরতে সাহায্য করেন বলে দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন। কার্যত ছুটে গিয়ে কলকাতার উড়ান ধরতে হয় তাঁকে। রাত পৌনে ১১টায় কলকাতায় নামার পরে এক ঘণ্টা কনভেয়র বেল্টের সামনে দাঁড়িয়ে দেখেন, তাঁর দু’টি ব্যাগের একটিও আসেনি। আরও দুই যাত্রীর ব্যাগ আসেনি। এর পরে অভিযোগ জানানোর জন্য শুরু হয় এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসারের খোঁজ।
দেবাশিসবাবুর অভিযোগ, ‘‘পৌনে ১২টা থেকে প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সংস্থার কোনও অফিসারের দেখা পাইনি। আমার স্ত্রী ও শ্যালিকা অত রাতেও আমার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা দোতলায় উঠে উড়ান সংস্থার কাউন্টারে গিয়ে আমার জন্য সাহায্য চাইলে যে ব্যবহার পান, তা খুবই দুঃখজনক।’’ শেষে রবিবার রাতে লিখিত অভিযোগ জানান দেবাশিসবাবু। সোমবার বিকেলে জানতে পারেন, দিল্লিতে তাঁর ব্যাগ দু’টির খোঁজ মিলেছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত সেই ব্যাগ হাতে পাননি তিনি।
সোমবার দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘নিজেদের স্টার অ্যালায়েন্সের সদস্য বলে বড়াই করে এয়ার ইন্ডিয়া। তাদের গোল্ড মেম্বার হিসেবে আমার যদি এই হেনস্থা হয়, তা হলে সাধারণ যাত্রীদের কী হাল হয়? রবিবার অভিযোগ করার জন্য ৪৫ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করার সময়ে অবাক হয়ে গেলাম এদের পেশাদারিত্বের অভাব দেখে।’’
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রীর এই ভোগান্তি দুর্ভাগ্যজনক। তবে কিছু কিছু বিষয় থাকে যা উড়ান সংস্থার হাতের বাইরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy