Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

তল্লাশির কড়াকড়িতে হয়রানি বিমানবন্দরে

সাধারণত অভ্যন্তরীণ উড়ান ধরতে কমপক্ষে দু’ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা। অভিযোগ, বেশির ভাগ যাত্রীই হেলতে দুলতে এক ঘণ্টা আগে পৌঁছন। রবিবার সব বিমান সংস্থার কর্তারাই যাত্রীদের অন্তত আড়াই ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর জন্য অনুরোধ করেছেন।

অপেক্ষা: এ ভাবেই লাইন দিতে হচ্ছে যাত্রীেদর। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: এ ভাবেই লাইন দিতে হচ্ছে যাত্রীেদর। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩২
Share: Save:

ছুটির দিন এমনিতেই একটু বেশি ভিড় হয়। তার উপরে যোগ হয়েছে নিরাপত্তার ব্যাপক কড়াকড়ি।

এর ফলে, রবিবার ছুটির দিন কলকাতা বিমানবন্দরে দেহ তল্লাশির লাইনে দাঁড়িয়ে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে কয়েকশো যাত্রীকে। অভিযোগ, এর ফলে বেশ কয়েক জন যাত্রী উড়ান ধরতে পারেননি।

সাধারণত অভ্যন্তরীণ উড়ান ধরতে কমপক্ষে দু’ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা। অভিযোগ, বেশির ভাগ যাত্রীই হেলতে দুলতে এক ঘণ্টা আগে পৌঁছন। রবিবার সব বিমান সংস্থার কর্তারাই যাত্রীদের অন্তত আড়াই ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর জন্য অনুরোধ করেছেন। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নিরাপত্তা বেষ্টনীতে গিয়ে দেহ তল্লাশিতে সময় লাগছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শনিবার দেশ জুড়ে যে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে যাত্রীদের জুতো পর্যন্ত খুলে দেখা হচ্ছে। জুতোর সঙ্গে বেল্ট, জ্যাকেট খুলে তা এক্স-রে মেশিনে দিয়ে দেহ তল্লাশি করতে গিয়ে বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। এর ফলে, কলকাতা বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে চারটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর সামনে থেকে সাপের মতো লাইন টার্মিনালের গেট পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। যাত্রীদের অনেকে সময়মতো বিমানে পৌঁছনোর জন্য এক লাইন থেকে অন্য লাইনে দৌড়েও বেরিয়েছেন।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে বিমান ছাড়ার সময়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়েও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তার বেশি দেরি হওয়া যাত্রীরা উড়ান ধরতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক বিমান সংস্থার অফিসারের কথায়, ‘‘এই কারণেই আমরা সকলকে বলছি, অন্তত আড়াই ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছতে। নিরাপত্তার এই কড়াকড়ি আগামী কয়েক দিন ধরে চলবে বলেই আমাদের ধারণা। আজ সকালে যাঁরা উড়ান ধরতে পারেননি, তাঁদের সবাইকে অতিরিক্ত টাকা ছাড়াই পরের উড়ানে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।’’

অন্য এক বিমান সংস্থার অফিসার জানিয়েছেন, সকালে দিল্লি থেকে এসে অনেক যাত্রী উত্তর-পূর্ব ভারতের উড়ান ধরেন। তাঁদের হাতে বেশি সময় থাকে না। অন্য সময় হলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-কে অনুরোধ করলে এই যাত্রীদের লাইনের সামনের দিকে নিয়ে গিয়ে উড়ান ধরতে সাহায্য করা হয়। এ দিন নিরাপত্তারক্ষীরা সেই অনুরোধও রাখেননি। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে খবর, বহু ক্ষণ অপেক্ষার পরে যাত্রীরা যখন দেখেছেন, পাশ দিয়ে অন্য যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন তাঁরা গোলমাল শুরু করে দেন। এক নিরাপত্তা অফিসারের কথায়, ‘‘সাধারণত কাপড়ের জুতো যাঁরা পড়েন, তাঁদের জুতো খুলে এক্স-রে করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, চামড়ার জুতোর ক্ষেত্রে হয়। কাপড়ের জুতো পরা যাত্রীকে ছেড়ে দিলে চামড়ার জুতো পরা যাত্রীরাই আপত্তি করে জানিয়েছেন, সবাইকে তল্লাশি করতে হবে। এ নিয়ে এ দিন একদল যাত্রী হইচইও জুড়ে দিয়েছেন।’’

শনিবার থেকেই যাত্রী ছাড়া আর সকলকে টার্মিনালে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। টার্মিনালে ঢোকার মুখে কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীদের ছোট ব্যাগ এক্স-রে করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি, বিমানে ওঠার মুখে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার কর্মীরা আবার যাত্রীদের হাত ব্যাগ পরীক্ষা করছেন। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখন গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার যাত্রী কলকাতা থেকে অন্য শহরে উড়ে যান। ছুটির দিন সংখ্যাটা প্রায় ৩২ হাজার হয়ে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে এত জনকে তল্লাশি করতে সময় লাগবে। তাই সময়মতো বিমানবন্দরে না এলে উড়ান মিসও হবে, জানিয়েছেন বিমানবন্দরের

এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE