আইন আছে। তবু থেকেও নেই!
শহরে ফের একটি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনের সেই নির্বিকার মনোভাবই আবার বেআব্রু হয়ে গেল।
গত সেপ্টেম্বরেই পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে বাড়ি ভেঙে পড়ে দু’জনের মৃত্যুর পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নড়ে বসেছিল প্রশাসন। বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙার আইনও করেছে রাজ্য। কিন্তু সেই আইন প্রয়োগে বিলম্বেই কি আরও তিন জনকে প্রাণ হারাতে হল? মঙ্গলবার এ প্রশ্নের জবাবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইন হলেই হঠাৎ করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। প্রয়োগ হচ্ছে ধাপে ধাপে। বিভিন্ন এলাকায় বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।’’ এর পরেও জীর্ণ বাড়ি আঁকড়ে অনেকেই রয়ে যাচ্ছেন। বড়বাজারের ওই বাড়ির কথা তুলে মেয়র বলেন, ‘‘ওই বাড়ি নতুন করে গড়ার অনুমোদন আগেই দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও ওই বাড়িতে লোকজন থাকায় ভাঙার কাজ শুরু করতে পারেনি নির্মাণকারী সংস্থা।’’
আরও পড়ুন: জীর্ণ বাড়ি ভেঙে বলি এ বার তিন
ও ভাড়াটেদের নোটিস পাঠিয়ে বলা হবে, বাড়িটি বিপজ্জনক। না মানলে মালিক ও ভাড়াটেদের জানাতে হবে, কেন তা বিপজ্জনক নয়। ১৫ দিনে উত্তর দিতে হবে। জবাব না এলে বাড়িটি কনডেম্ড (বসবাসের অযোগ্য) ঘোষণা করবে পুরসভা। মালিককে বলা হবে এক মাসের মধ্যে বিল্ডিং প্ল্যান দিতে। তা না দিলে পুর প্রশাসন ধরে নেবে, তিনি বাড়ির সংস্কারে রাজি নন। তখন টেন্ডারের মাধ্যমে কোনও নির্মাণকারী সংস্থাকে কাজের ভার দেবে পুরসভা। এ ক্ষেত্রে নির্মাণ চলাকালীন বাড়ির ভাড়াটেদের থাকার ব্যবস্থা করবে সেই নির্মাণকারী সংস্থাই। ওই অফিসার জানান, ইতিমধ্যেই পুরসভা ২০টি বিপজ্জনক বাড়ির মালিককে নোটিস পাঠিয়েছে। এর মধ্যে বি বা দী বাগের কাছে হেমন্ত বসু সরণিতে একটি বাড়ির পুনর্নির্মাণের জন্য প্ল্যান জমা দিয়েছেন মালিকপক্ষ। তবে সব ক’টি ধাপের কাজ শেষ হতে আরও ছ’মাস মতো সময় লাগবে।
কিন্তু এর মধ্যে আরও বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়লে কী হবে?
মেয়র শোভনবাবু বলেন, ‘‘মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। বিপজ্জনক বাড়ি থেকে সরে যেতে হবে। নোটিস দিয়ে, বিজ্ঞাপন লাগিয়ে সেটাই বারংবার বলা হচ্ছে।’’ তাঁরা যাবেন কোথায়? এর অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি। শিবতলা লেনে মৃতের ছেলের অভিযোগ, ‘‘নির্মাণের সময়ে অন্যত্র থাকার জায়গা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রোমোটার তা দেননি। তাই বাবা ওই বাড়ি ছাড়তে চাননি।’’