Advertisement
০৮ মে ২০২৪

আদালতে মানিক আসতেই রব উঠল ‘চোর, চোর, চোর’! জুতোও দেখানো হল তৃণমূল বিধায়ককে

মঙ্গলবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করেছে তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। এর পরে ব্যাঙ্কশাল আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।

জুতো হাতে তুলে নিয়ে মানিককে ঘিরে বিক্ষোভ উন্মত্ত জনতার।

জুতো হাতে তুলে নিয়ে মানিককে ঘিরে বিক্ষোভ উন্মত্ত জনতার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২ ১৫:১৬
Share: Save:

আদালত চত্বরে প্রবেশ করতেই মানিককে ঘিরে উঠল ‘চোর চোর’ রব। পাশাপাশি জুতো দেখিয়েও বিক্ষোভ দেখানো হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে ঘিরে। সোমবার রাতেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। নিয়োগ-দুর্নীতি মামলার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে টানা জেরার পর সোমবার রাতে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এর পরই মঙ্গলবার শারীরিক পরীক্ষার পরে তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে আদালত চত্বর।

উপস্থিত জনতাকে জুতো হাতে তুলে নিয়ে মানিককে উদ্দেশ্য করে ‘চোর চোর’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। মানিককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উপস্থিত বিজেপি সমর্থকরাও। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি নেতা তথা কাউন্সিলর সজল ঘোষ। জুতো উঠে এসেছিল তাঁর হাতেও। তিনি বলেন, ‘‘চোরকে চোর বলা হচ্ছে, কোনও অন্যায় করা হয়নি। জুতো নিয়ে মারতে এসেছিলাম। নিরাপত্তা থাকায় মারতে পারিনি। আফসোস নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।’’

প্রসঙ্গত, নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কয়েক দিন আগে আদালত কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়ার পর হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পর বেরিয়ে পার্থকে লক্ষ্য করে জুতোও ছোড়া হয়েছিল । পাশাপাশি, ‘চোর চোর’ স্লোগান তোলা হয়েছিল গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ঘিরেও।

প্রসঙ্গত, সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিককে ইডির আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠান। সূত্রের খবর, ইডির তরফে তাঁকে যে সময়ে তলব করা হয়েছিল, সেই সময়ের অনেক পরে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন। এরপর রাতভর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত থেকে তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পর বয়ানে অসঙ্গতি এবং জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে পলাশিপাড়ার বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়।

নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় মানিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে যে নথি জমা দিয়েছিলেন, সেখানেও একাধিক গরমিল রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

এর আগে হাই কোর্ট এই মামলায় তদন্তভার দিয়েছিল সিবিআইকে। টেট-কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিক। প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় শুনানি শেষ হলেও সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা স্থগিত রাখে। শীর্ষ আদালত এ-ও জানিয়ে দেয়, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত মানিককে কোনও ভাবেই গ্রেফতার করতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তবে, টেট মামলায় সিবিআই তদন্ত করার যে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্ট দিয়েছিল, তাতেও স্থগিতাদেশ দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত। এই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই সোমবার রাতে মানিককে গ্রেফতার করে ইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE