ফাইল চিত্র।
কোভিড হাসপাতালের ঝাঁ-চকচকে ওয়ার্ডের পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু নম্বর কাটা গেল অপরিচ্ছন্ন শৌচাগারের জন্য। বস্তুত, শৌচাগারের এমনই ভয়াবহ দশা যে, বাকি বিভাগের সাফল্য তাতে ঢাকা পড়ে গেল।
গত বুধবার রাত থেকে জ্বরের পাশাপাশি কাশির উপসর্গ দেখা দেয় ভাটপাড়ার বাসিন্দা, মাঝবয়সি এক ব্যক্তির। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোভিড পরীক্ষা করানো হলে তাঁর দেহে নোভেল করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর আক্রান্তের বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। সোমবার গভীর রাত থেকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের (এসএসবি) পাঁচতলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই করোনা-আক্রান্ত। কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি ফোনে জানান, মেডিক্যাল কলেজের ওয়ার্ডের প্রতিটি ব্লকে ছ’টি করে শয্যা রয়েছে। তাঁদের প্রতিদিন তিন বার করে চিকিৎসকেরা দেখে যাচ্ছেন। কর্তব্যরত নার্সরাও রোগীদের ভাল যত্ন নিচ্ছেন। কিন্তু যত গন্ডগোল শৌচাগারে!
বুধবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীনেরা জানান, ওয়ার্ডে এখন প্রায় ৩৫ জন রোগী রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের ব্যবহারের জন্য যে শৌচাগারগুলি রয়েছে, তার একটিও ব্যবহারযোগ্য নয়। রোগীদের অভিযোগ, অপরিচ্ছন্ন শৌচাগারের জন্য তাঁদের স্বাস্থ্য বিপন্ন।
শৌচাগারের যত্রতত্র নোংরা পড়ে রয়েছে। পূতিগন্ধময় পরিবেশে ওয়ার্ডের বয়স্ক মানুষেরা অসুবিধায় পড়ছেন। এক আক্রান্ত বলেন, ‘‘প্রবীণ, অশীতিপর রোগীরাও ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। খাবার, পানীয় জল একেবারে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝেও সব সময়ে পরিষ্কার রাখা হচ্ছে। কিন্তু শৌচাগার একেবারে যাওয়ার মতো নয়।’’ অপরিচ্ছন্নতার জন্য মঙ্গলবার শৌচাগারে যাননি বলে জানিয়েছেন তিনি। এ দিন বাধ্য হয়ে কোনও রকমে শৌচকর্ম সেরেছেন। এক আক্রান্ত জানান, ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সুপারভাইজ়ারদের শৌচাগার পরিষ্কারের অনুরোধ জানালে আশ্বাস ছাড়া কিছু মেলেনি।
একটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের শৌচাগারের এই অবস্থা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কী হাল। পরিচ্ছন্ন শৌচাগার এক জন রোগীর ন্যূনতম অধিকার। শৌচাগার পরিষ্কার করলেই হবে না, তা যাতে সব সময়ে পরিষ্কার থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।’’
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘শৌচাগারগুলি দ্রুত পরিষ্কারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy