ট্যাক্সিওয়েতে বসেই বিক্ষোভে যাত্রীরা। বুধবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র।
যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা বিমানে উঠেছিলেন সকাল ন’টায়। কিন্তু, বিকেল পাঁচটাতেও যখন তাঁরা দেখলেন গন্তব্যে পৌঁছতেপারেননি, তখন তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়।
বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের এপ্রন এলাকায় (যেখান দিয়ে বিমানচলাচল করে) চার্লি ট্যাক্সিওয়ের সামনে বসে পড়েন জনা কুড়ি যাত্রী। সেখানে বসেই কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে তাঁদের বুঝিয়ে তুলে দেওয়া হয়। স্পাইসজেটের উড়ানে তাঁরা বাগডোগরা থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন।কিন্তু, জ্বালানি ভরার জন্য উড়ানটিকে কলকাতায় নামতে হয় দুপুর আড়াইটে নাগাদ।
এ ভাবে কলকাতা বিমানবন্দরের এপ্রন এলাকায় বসে পড়ে যাত্রীদের বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনা খুবই বিরল বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা। ওই এলাকা সুরক্ষিত। কারণ, সেখান নিয়ে বিমান যাতায়াত করে।
সূত্রের খবর, এ দিন সকালে যাত্রীদের নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে উড়ানটি যখন বাগডোগরায়নামতে আসে, তখন সেখানে আবহাওয়া ছিল বেশ খারাপ। সেই কারণে নামার আগে কিছু ক্ষণ বিমানটিকে আকাশে চক্কর কাটতে হয়। তাতে বেশ কিছুটা জ্বালানি নষ্ট হয়। বাগডোগরা থেকে বেঙ্গালুরু রওনা হওয়ার সময়ে পাইলট দেখেন, ফেরার জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। এ দিকে, ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে ওড়ার জন্য প্রস্তুত উড়ান। তখনওআবহাওয়া ভাল ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী, খারাপ আবহাওয়ায় ওড়ার সময়ে বিমানের ওজন কম রাখতে হয়। অত জন যাত্রী ও তাঁদের মালপত্র সমেত বিমানের ওজন তখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। উড়ান সংস্থার কর্তাদের দাবি, তাই বাগডোগরা থেকে বেশি জ্বালানি নেওয়া যায়নি। অঙ্ক কষে দেখা যায়, বাগডোগরা থেকে জ্বালানি নেওয়ার পরেও আবার জ্বালানির প্রয়োজন হবে। তাই বাধ্য হয়েই বেঙ্গালুরুর পথে কলকাতায় নামতে হয় বিমানটিকে। সে কথা যাত্রীদের মাঝপথে জানানোও হয়েছিল।
কলকাতায় নামার পরে দেখা দেয় অন্য বিপত্তি। পাইলট-সহ বিমানকর্মীরা ডিউটির সময়সীমার বাধানিষেধে (ফ্লাইট ডিউটিটাইম লিমিটেশন) পড়ে যান। নিয়ম অনুযায়ী, পাইলট ও বিমানসেবিকারা দিনে নির্দিষ্ট কিছু ঘণ্টার বেশি উড়তে পারেন না। সকালে তাঁরা বেঙ্গালুরু থেকে রওনা হন। তার পরে বাগডোগরায় পৌঁছন। তার পরে আবার কলকাতায় এসে নামেন। এখানে এসে নামার পরে দেখা যায়, বেঙ্গালুরু পর্যন্ত তাঁরা আর উড়ান নিয়ে যেতে পারবেন না।এর ফলে কলকাতায় নেমে জ্বালানি ভরার পরে হয় আবার নতুন পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ব্যবস্থা করতে হত, নয়তো অন্য বিমানে যাত্রীদের বেঙ্গালুরু পাঠাতে হত। উড়ান সংস্থা প্রথমে বিকল্প বিমানের ব্যবস্থা করে। তখনই চার্লি ট্যাক্সিওয়েতেদাঁড়িয়ে থাকা বিমান থেকে যাত্রীদের নামিয়ে টার্মিনালে আনার তোড়জোড় শুরু করতেই ক্ষিপ্ত যাত্রীদের একাংশ সেখানেই বসে পড়েন। তাঁদের দাবি, ওই বিমানে করেই তাঁদের বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে হবে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-এর অফিসারেরা গিয়ে যাত্রীদের নিরস্ত করেন।উড়ান সংস্থার পক্ষ থেকে নতুন পাইলট ও বিমানসেবিকাদের নিয়ে আসা হয়। পৌনে ছ’টা নাগাদ ওই বিমানেই তাঁদের বেঙ্গালুরুপাঠানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy