Advertisement
E-Paper

কাস্টমার কেয়ারেও জালিয়াতদের ভূত, ফোন করে টাকা খোয়াচ্ছেন ব্যাঙ্ক গ্রাহকরা

গত দু’সপ্তাহে এ রকম একাধিক প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে কলকাতা এবং শহরতলিতে। এখনও এই নয়া কায়দায় প্রতারণার কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তাঁদের সন্দেহ এটাও এক ধরণের স্কিমিং।

সিজার মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৫৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কাস্টমার কেয়ারেও এবার ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের থাবা। বিভিন্ন অনলাইন বিপণন সংস্থা এবং অনলাইন টাকা ট্রান্সফারের অ্যাপের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা।

গত দু’সপ্তাহে এ রকম একাধিক প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে কলকাতা এবং শহরতলিতে। এখনও এই নয়া কায়দায় প্রতারণার কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তাঁদের সন্দেহ এটাও এক ধরণের স্কিমিং

হাওড়ার মৌমিতা দে(নাম পরিবর্তিত) সল্টলেক সেক্টর ফাইভে একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। কয়েক দিন আগেই তাঁর একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি তাঁর অন্য একটি অ্যাকাউন্টে তিন হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন। তিনি একটি অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে সেই টাকা ট্রান্সফার করেন। ইলেক্ট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় করা লিখিত অভিযোগে এই তরুণী জানিয়েছেন, ওই টাকা ট্রান্সফারের পর তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয় কিন্তু অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছয় না। পরের দিন তাঁর মা ওই ব্যাঙ্কে গিয়েও জানতে পারেন যে টাকা জমা হয়নি ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। ওই তরুণী তখন টাকা ট্রান্সফারের সেই অ্যাপের কাস্টমার কেয়ারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)

তরুণী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, অভিযোগ জানানোর পরই একটি মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। ওই ব্যক্তি নিজেকে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে মৌমিতাকে জানান, তাঁর কার্ডে কিছু সমস্যা আছে। তাঁর টাকা ফেরত পাঠানো হবে। সেই সূত্রেই তিনি ওই তরুণীর ডেবিট কার্ডের নম্বরের শেষ ছ’টি নম্বর জানতে চান। মৌমিতার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,“আমি প্রথমে নম্বর দিতে চাইনি। কিন্তু ওই ব্যক্তি আমার মায়ের ব্যাঙ্কে যাওয়া থেকে শুরু করে বাকি সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে দেওয়ায় আমি কার্ডের শেষ ছ’টি নম্বর দিই। এর পরই একটি ভেরিফিকেশন কোড আসে। ওই কোডটি জানতে চাওয়া হয়। সাধারণ ভাবে টাকা লেনদেনের জন্য যে রকম ওটিপি আসে ওই মেসেজটি সেই রকম ছিল না। তাই আমি সন্দেহ করিনি।” তরুণী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, এর পরই তার অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখ টাকা ট্রান্সফার হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: রজতের ‘খুনের’ পুনর্গঠন করল পুলিশ

ওই তরুণীর মতই একই ভাবে এক লাখ বাইশ হাজার টাকা খুইয়েছেন কৈখালির একটি বিউটি পার্লারের কর্মী রূপা থাপা। এ মাসের গোড়ায় তিনি বিধাননগর সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানাতে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি একটি অনলাইন বিপণি থেকে কিছু জামা কাপড় কিনেছিলেন। তার মধ্যে একটি পছন্দ না হওয়ায় তিনি সেটি ফেরত দেওয়ার জন্য সংস্থার কাস্টমার কেয়ারে ফোন করেন। রূপা বলেন, “কাস্টমার কেয়ার নম্বরে ফোন করার পর আমাকে ফের ওরা ফোন করে। কেনার সময় আমি নগদ টাকা (ক্যাশ অন ডেলিভারি)-তে কিনেছিলাম। ওঁরা অ্যাকাউন্ট নম্বর জানতে চায় টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। আমি সেই নম্বর দেওয়ার পর মোবাইলে একটি লিঙ্ক আসে।”

আরও পড়ুন: তরুণীর ফোন নম্বর, ছবি-সহ অশ্লীল লিফলেট

রূপার অভিযোগ, সেই লিঙ্কে ক্লিক করার পরই কয়েক দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখ বাইশ হাজার টাকা উঠে যায়। রূপার অ্যাকাউন্টটি যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে, হাওড়ার তরুণীরও অ্যাকাউন্ট সেই একই ব্যাঙ্কে। হাওড়ার ওই তরুণী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, দু’দফায় এক লাখ টাকা ইউপিআই-র সাহায্যে অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে। তদন্তকারীরা রূপার ক্ষেত্রেও ইউপিআইয়ের ব্যবহার হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তদন্তকারীদের সন্দেহ, কাস্টমার কেয়ারের নম্বর বা অনলাইন যোগাযোগ কোনও ভাবে হ্যাক করছে ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা। আর জেনে নিচ্ছে সমস্ত তথ্য। এরপর, ভেরিফিকেশন কোডের মোড়কে ওটিপি পাঠাচ্ছে যাতে গ্রাহকের সন্দেহ না হয়। প্রতারণার ওই নয়া কায়দার পিছনে সংগঠিত চক্র আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Crime Bank Fraud Skimming
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy