Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সমাবেশে যোগ দিতে এসেই চিড়িয়াখানা দেখতে ছুট

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর কলেজের ওই পড়ুয়া ছাড়াও শনিবার দুপুরের পরে চিড়িয়াখানায় মালদহ, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের ভিড় ছিল দেখার মতো।

 ব্যাঘ্রদর্শন: সমাবেশের ব্যাজ পরেই আলিপুর চিড়িয়াখানায়। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

ব্যাঘ্রদর্শন: সমাবেশের ব্যাজ পরেই আলিপুর চিড়িয়াখানায়। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচার সামনে থেকে ভিড়টা কিছুতেই সরছিল না। খাঁচাবন্দি বাঘের সামনে নিজস্বী তুলতে হুড়োহুড়ি অবস্থা। ওঁরা কেউ দক্ষিণ দিনাজপুর, কেউ মালদহ, কেউ বা পুরুলিয়ার বাসিন্দা। তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে কলকাতায় শনিবার সকালেই পা রেখেছেন ওঁরা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় শিবিরে স্নান, খাওয়া সেরে সোজা আলিপুর চিড়িয়াখানা দর্শন। চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচার সামনে বন্ধুদের সঙ্গে নিজস্বী তোলার ফাঁকে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর কলেজের ছাত্র দেবা হেমব্রম বললেন, ‘‘এ বার আমার প্রথম কলকাতায় আসা। ২১ জুলাই উপলক্ষে এলেও আলিপুর চিড়িয়াখানা ঘোরা হয়ে গেল। এর পরে ভিক্টোরিয়া যাব। বলতে পারেন, রথ দেখা, কলা বেচা দুটোই হবে।’’

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর কলেজের ওই পড়ুয়া ছাড়াও শনিবার দুপুরের পরে চিড়িয়াখানায় মালদহ, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের ভিড় ছিল দেখার মতো। শহিদ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাত থেকেই কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক, আলিপুরের উত্তীর্ণ, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে কর্মীরা একে একে ঢুকছেন। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের কর্মীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুরসভার বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে প্রায় তিনশো কর্মী এসেছেন। এখানে কুড়ি হাজার কর্মীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেকের জন্য ভাত, ডিম-আলুর ঝোল, আলুসেদ্ধর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

শুক্রবার রাত থেকেই গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে দূর-দূরান্তের কর্মীদের জন্য খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। কুড়ি হাজার কর্মীর রান্নার জন্য স্টেডিয়ামের মধ্যেই বিশাল জায়গা জুড়ে হেঁশেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে কর্মীদের খাওয়াদাওয়ার জন্য পঞ্চাশ হাজার ডিম, পাঁচশো বস্তা আলু ছাড়াও দু’শো কেজি পেঁয়াজ রাখা হয়েছে।

এ দিন দুপুরে গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে খাওয়াদাওয়া সেরে বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থক শহর ঘুরতে বেরোলেন। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা মহম্মদ নওসাদ স্ত্রী, বোনকে নিয়ে শনিবার সকালে প্রথম কলকাতায় এসেছেন। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে স্নান-খাওয়া সেরে কলকাতা চিড়িয়াখানার উদ্দেশে রওনা দিলেন। বললেন, ‘‘চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, জাদুঘরে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। শহিদ দিবস উপলক্ষে কলকাতায় এক দিন আগে এসে শহরটা দেখে নিতে চাই। বোন, স্ত্রীকেও সঙ্গে এনেছি।’’

চিড়িয়াখানায় জিরাফ দেখতে দেখতে নিজেদের মধ্যে রাজবংশী ভাষায় কথা বলছিলেন কোচবিহারের নজরুল ইসলাম, আব্দুল আলিরা। শনিবার সকালে ট্রেন থেকে নেমেছেন। আলিপুরের উত্তীর্ণয় স্নান-খাওয়া সেরে হাঁটাপথে চিড়িয়াখানা দর্শন। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোচবিহারে লোকসভা ভোটে বিজেপি ভাল ফল করলেও বিধানসভায় দিদির পক্ষেই রায় হবে। মুখ্যমন্ত্রী রাজবংশী ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। জেলায় উন্নয়নেরও কাজ হয়েছে। মানুষ নিজের ভুলটা ঠিক বুঝবেন।’’ পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি থেকে এই প্রথম কলকাতায় এসেছেন লালু কোনার। বুকে শহিদ দিবসের ব্যাজ পরে চিড়িয়াখানা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও জনা দশেক কর্মী। লালু বলেন, ‘‘শনিবার সকালেই আলিপুরে উত্তীর্ণয় এসেছি। পাশেই চিড়িয়াখানা রয়েছে শুনে স্নান, খাওয়া সেরে সোজা বেরিয়ে পড়েছি। এই সুযোগ তো আর মিলবে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC TMC Martyr's Day Alipore Zoo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE