Advertisement
E-Paper

Petrol pump: জনবসতি এলাকায় পাম্প, অগ্নি-সুরক্ষা কত দূর

আধুনিক স্প্রিঙ্কলার বা ফায়ার অ্যালার্ম কার্যত নেই! এ দৃশ্য সুকিয়া স্ট্রিটের একটি পেট্রল পাম্পের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৬:১০
বিপজ্জনক: ক্যামাক স্ট্রিটের এই পেট্রল পাম্প সংলগ্ন বহুতলে আগুন লেগেছিল বৃহস্পতিবার। তার পরে হাতের কাছে রাখা হয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র।

বিপজ্জনক: ক্যামাক স্ট্রিটের এই পেট্রল পাম্প সংলগ্ন বহুতলে আগুন লেগেছিল বৃহস্পতিবার। তার পরে হাতের কাছে রাখা হয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র। শুক্রবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

গলির দু’ধারে ঘেঁষাঘেঁষি করে উঠেছে বাড়ি। বড় গাড়ি যাওয়া তো দূর, ভ্যান ঢুকলে পাশ দিয়ে সাইকেল যাওয়ারও জায়গা থাকে না! বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গলির মুখে কিছুটা ফাঁকা পরিসর ছিল কয়েক বছর আগেও। এখন সেখানে গজিয়ে উঠেছে পেট্রল পাম্প। গায়ে গায়ে থাকা বাড়ির একটিতে আগুন লাগলে কী হবে? দমকলের গাড়ি ঢুকবে কোথা দিয়ে? পেট্রল পাম্প পর্যন্ত আগুন পৌঁছলে কী উপায়? এমন ক্ষেত্রে লড়াইয়ের রসদ বলতে সম্বল বালি ভর্তি বালতি। আধুনিক স্প্রিঙ্কলার বা ফায়ার অ্যালার্ম কার্যত নেই! এ দৃশ্য সুকিয়া স্ট্রিটের একটি পেট্রল পাম্পের।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তেমনই এক জনবহুল অঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে বহুতল সংলগ্ন পেট্রল পাম্প। আগুন লেগেছিল ক্যামাক স্ট্রিটের ওই বহুতলের একটি ফ্ল্যাটে। তার গায়েই রয়েছে পাম্পটি। বহুতলের বাসিন্দাদের আতঙ্ক বাড়ে এই ভেবে যে, আগুন তেলের ট্যাঙ্ক পর্যন্ত পৌঁছলে কী হবে! এ দিন ওই পাম্পে গিয়ে দেখা গেল, কয়েকটি অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র থাকলেও সেগুলি বড় অগ্নিকাণ্ডে লড়ার জন্য পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু পেট্রল পাম্পের ম্যানেজার শঙ্কর রায়ের যুক্তি, ‘‘আমাদের ওই অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র দিয়েই কিন্তু বহুতলের আগুন নেভানোর চেষ্টা হয়েছে। তা ছাড়া আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই পাম্পের মেন সুইচ অফ করে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’’ এটুকুই কি পর্যাপ্ত?

সুকিয়া স্ট্রিটের ঘিঞ্জি এলাকার সেই পেট্রল পাম্পের ম্যানেজার দিলীপ নস্কর আরও খানিকটা উদাসীন হয়ে বললেন, ‘‘আমাদের চারটে বালতিতে ভর্তি বালি আছে। এর বেশি আর কী চাই?’’ এটাই ব্যতিক্রম নয়, এই পাম্পের মতোই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছাড়া শহর জুড়ে জ্বালানি তেলের কারবার চলছে বলে অভিযোগ।

শুক্রবার দেখা গেল, শহরের বহু পাম্পেই নেই পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র। কোথাও কোথাও তা থাকলেও, কিছু ক্ষেত্রে আবার সেগুলোর মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। প্রায় কোথাওই রাখা হয়নি ফায়ার অ্যালার্ম, স্প্রিঙ্কলারের মতো ব্যবস্থা। যা দেখে স্পষ্ট, সাম্প্রতিক অতীতে কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেও হুঁশ ফেরেনি বহু পাম্প মালিকের। ফলে বন্দোবস্ত বলতে কয়েক বালতি বালি!

বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে একটি পেট্রোল পাম্পের পিছনের বাড়িতে আগুন লেগেছিল প্রথম দফার লকডাউনের আগেই। সেই পাম্পের মালিক দর্শন এম সঙ্ঘভী একটি সুইচ দেখিয়ে দাবি করলেন, ‘‘শুধু অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র বা বালিতে কাজ হয় না। পুরনো ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই সুইচ তৈরি করিয়েছি।’’ বেলেঘাটার একটি পাম্পে কয়েকটি অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র দেখা গেলেও সব ক’টিই মেয়াদ উত্তীর্ণ। ম্যানেজার তমাল ঘোষ জলের রিজ়ার্ভার দেখিয়ে দাবি করলেন, ‘‘এই জল নিয়ে তৈরি আছি । কখনও আগুন লাগেনি। তাই আর কী কী ব্যবস্থা লাগে, জানা নেই।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন যদিও বললেন, ‘‘কয়েক বছর আগেই এক নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন পাম্প করলে অন্তত ১০ কাঠা জায়গা দরকার। সে ক্ষেত্রে পাশে বসতবাড়ি থাকলেও সমস্যা নেই। কিন্তু শহরে বহু তেলের পাম্পই লোকালয়ে। পুরনো পাম্প তো সরিয়ে নিতে বলা যায় না! উপযুক্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা, আগুন লাগলেই দমকলে খবর দেওয়া, এমনকি দমকলের গাড়ি পৌঁছে যাওয়ার পাশাপাশি নির্দিষ্ট কয়েকটি ইঞ্জিন স্রেফ পাম্পের নিরাপত্তার জন্যই রাখার কথা।’’

দমকল-অধিকর্তা অভিজিৎ পাণ্ডে বললেন, ‘‘তেলের ট্যাঙ্ক মাটির নীচে থাকায় সেই পর্যন্ত আগুন পৌঁছে বিপদের ঝুঁকি কম থাকে। কারণ ট্যাঙ্ক অগ্নিনিরোধক ভাবেই তৈরি হয়। তা ছাড়া খোলামেলা জায়গা ছাড়া পাম্প তৈরির অনুমতি দেওয়া হয় না। এর পরেও আগুন লাগলে দমকল যা করার সমস্তটাই করে থাকে।’’

Petrol Pump Fire Fighting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy