Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভিআইপি-র ধারে জঞ্জাল, ক্ষুব্ধ বিচারপতি

নয়ানজুলি বোজানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি। সেই পরিদর্শনে গিয়েই তাঁর চোখে পড়ল ভিআইপি রোডের পাশে জড়ো হয়ে থাকা জঞ্জালের স্তূপ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৬
Share: Save:

নয়ানজুলি বোজানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি। সেই পরিদর্শনে গিয়েই তাঁর চোখে পড়ল ভিআইপি রোডের পাশে জড়ো হয়ে থাকা জঞ্জালের স্তূপ। রাস্তার ধারে এমন ভাবে জঞ্জাল ফেলে রাখা হয়েছে কেন, তা জানতে চেয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদির মন্তব্য, ‘‘পুরসভা তা হলে কী করছে?’’

লেকটাউনে ভিআইপি রোডের ধারে নয়ানজুলি বুজিয়ে ফেলা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে। সেই মামলাতেই ওই নয়ানজুলি পরিদর্শন করতে গিয়েছিল পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। দক্ষিণদাঁড়ি, গোলাঘাটা পেরিয়ে বাঙুর অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছে তিনি দেখেন, ডাঁই করে জঞ্জাল ফেলে রাখা
হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই সে বিষয়ে জানতে চান তিনি। সেখানে তখন হাজির ছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টিঙ্কু বর্মা। তিনি এগিয়ে এসে জানান, ওই জমিটি নিয়ে বিবাদ রয়েছে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিচারপতি। বরং জঞ্জাল ফেলে রাখায় পুরসভার পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ওই এলাকায় যে জঞ্জাল পড়ে রয়েছে, তা অবশ্য মেনে নিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর দীপ্তি রায়। তিনি জানিয়েছেন, এই জঞ্জাল ফেলা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুরসভাকে তা জানানো হয়েছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই জঞ্জাল সরিয়ে ফেলা হবে। এ ব্যাপারে পুরসভার মতামত জানতে চেয়ারম্যান পারিষদ (জঞ্জাল) দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

এ দিন ওই এলাকার নিকাশি নিয়েও বেশ কিছু মতামত দিয়েছে পরিবেশ আদালত। তারা বলেছে, নিকাশি কোনও মতেই যেন বাধা না পায়। তাই মাটির তলা দিয়ে বড় পাইপ বসাতে হবে। জলাশয়গুলির উপর দিয়ে প্রয়োজনে ফুটব্রিজ করা যেতে পারে।

সাঁতরাগাছি ঝিলের দূষণ এবং পরিযায়ী পাখিদের বাসস্থান নিয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন সাঁতরাগাছি ঝিলও পরিদর্শন করে ডিভিশন বেঞ্চ। সেখানে হাজির ছিলেন হাওড়ার পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও। পুরসভা সূত্রের খবর, সাঁতরাগাছি ঝিলে নিকাশি বর্জ্য পড়া এবং ঝিলের চারপাশে দখলদারি নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেন তাঁরা। পুর কমিশনার ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, ঝিলটি দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য স্থায়ী পদক্ষেপ করতে হবে। ঝিলে এসে পড়া সমস্ত নর্দমার গতি উল্টোদিকে করতে গেলে প্রায় ৪-৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ জন্য রেলকেও আর্থ সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আশপাশের দখলদার তুলতে গেলেও রেলের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন।

পরিদর্শনের পরে নীলাঞ্জনবাবু বলেন, আদালতের নির্দেশে ঝিল সাফ করা হয়েছে। তা দেখে ডিভি‌শন বেঞ্চ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ম্যাকিনটস বার্নকে নর্দমা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। যদিও সুভাষবাবুর বক্তব্য, পুরকর্মীরা ঝিল থেকে তোলা কচুরিপানা ও আবর্জনা ঝিল থেকে তুলে পাড়েই ফেলেছে। এই কারণে ঝিলের দক্ষিণ দিকের পাড় অনেকটা বুজ়ে গিয়েছে এবং সেখানে লোকজন আবর্জনা ফেলার ফলে ঝিলের জলে আরও দূষণ ছড়াচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garbage Trash VIP road Justice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE