Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Deaths

বাবাকে খুনে একাই জড়িত পিয়ালি, নিশ্চিত পুলিশ

জেরার মুখে তার দাবি, বাবা তার সব কাজেই বাধা দিতেন। আর সেই কারণেই বাবাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০৯
Share: Save:

বাবার খুনে অভিযুক্ত মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হল। পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলে অভিযুক্তকে নিয়ে যান তদন্তকারীরা। এর পরেই পুলিশ সিদ্ধান্তে আসে যে, ওই ঘটনায় দ্বিতীয় কেউ জড়িত নেই। পুরো ঘটনা একাই ঘটিয়েছে ধৃত পিয়ালি আঢ্য। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই নিজের বাবাকে খুন করেছিল সে। আর তার জন্য ঘটনার কয়েক দিন আগেই ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছিল অভিযুক্ত। গঙ্গার ধারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলেও পিয়ালি অবশেষে বেছে নিয়েছিল এমন একটি জায়গা, যা সাধারণত ফাঁকাই থাকে।

গত ২১ মার্চ ভোরে উত্তর বন্দর থানা এলাকার চাঁদপাল জেটির কাছে একটি পার্কের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় বিশ্বনাথ আঢ্যের অগ্নিদগ্ধ দেহ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, তপসিয়া থানা এলাকার ক্রিস্টোফার রোডের বাসিন্দা, পঞ্চান্ন বছরের বিশ্বনাথবাবুর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে তাঁর মেয়ে পিয়ালি। বাবাকে খুনের অভিযোগে মেয়েকে ওই দিনই গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত সূত্রের খবর, দু’দফার পুলিশি হেফাজতের শেষে এ দিন পিয়ালিকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে পুলিশের তরফে এক প্রত্যক্ষদর্শীকে দিয়ে অভিযুক্তের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন করা হয়। যা বিচারক মঞ্জুর করেন। সেই সঙ্গে পিয়ালিকে চোদ্দো দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

তদন্তকারীরা জানান, বাবার সঙ্গে বনিবনা ছিল না মেয়ের। ২০১৪ সালে মায়ের মৃত্যুর পরে মামাবাড়ি থেকে চলে এসে বাবার কাছে থাকতে শুরু করে পিয়ালি। জেরার মুখে তার দাবি, বাবা তার সব কাজেই বাধা দিতেন। আর সেই কারণেই বাবাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ঘটনার কয়েক দিন আগে পিয়ালি চাঁদপাল জেটির কাছের ওই পার্কটি ঘুরে যায়। সেটি ফাঁকা থাকে বলে পছন্দ হয় তার। শুধু তা-ই নয়, বাবাকে মদ খাওয়ানোর পরে অপকর্ম করতে সুবিধা হবে বলে মেয়ে একটি দোকান থেকে মদও কিনে এনেছিল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তার প্রমাণ মিলেছে। আর ওই মদ কেনার জন্য বিশ্বনাথের কর্মস্থল থেকে ঘটনার দিন কয়েক আগে পাঁচশো টাকা নিয়ে এসেছিল পিয়ালি।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে পিয়ালি জানিয়েছিল, ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে আরও এক জন। কিন্তু মামাবাড়ির এক আত্মীয়কে নিয়ে এসে জেরা করতেই সে স্বীকার করে নেয় যে, যা তথ্য দিয়েছে তা ভুল। এর পরেই বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুনর্তদন্ত করা হয়। তাতে পুরো ঘটনা কী ভাবে ঘটেছে, তা নিজেই পুলিশকে দেখায় পিয়ালি। যাতে সন্তুষ্ট হন তদন্তকারীরা। পিয়ালিকে ঘটনার দিন রাতে পাের্ক ঢুকতে দেখেছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতে ওই ব্যক্তিকে দিয়েই পিয়ালিকে শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Deaths father daughter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE