Advertisement
E-Paper

জরুরি অবস্থায় কারারুদ্ধ, নৌকায় শ্রীলঙ্কা অভিযান! কবি, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দত্ত প্রয়াত

আদ্যন্ত রঙিন চরিত্রের মানুষ জ্যোতির্ময় দত্ত ছিলেন বিচিত্রকর্মা। নৌকা চড়ে সাগরপাড়ি দেওয়া থেকে জরুরি অবস্থায় জেল খাটা— জীবনকে অন্য ছাঁদে গড়ে নিয়েছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:০৮
Jyotirmoy Dutta

জ্যোতির্ময় দত্ত। —ফাইল চিত্র।

প্রয়াত হলেন জ্যোতির্ময় দত্ত। কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক জ্যোতির্ময়ের বয়স হয়েছিল ৮৯। রবিবার ভোরে কলকাতায় প্রয়াত হন তিনি। বেশ কিছু দিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন।

জ্যোতির্ময়ের জন্ম ১৯৩৬ সালে, কলকাতায়। তবে বেড়ে ওঠা ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। প্রেসিডেন্সি কলেজ (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়)-এ ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা। তাঁর স্ত্রী ছিলেন কবি বুদ্ধদেব বসু ও সাহিত্যিক প্রতিভা বসুর কন্যা মীনাক্ষী দত্ত। তাঁদের দুই সন্তান কঙ্কাবতী দত্ত এবং মল্লিনাথ দত্ত।

সাহিত্যজীবনের শুরু ছাত্রাবস্থাতেই। কবিতা নিয়ে তাঁর স্বকীয় ভাবনাচিন্তা নজর কেড়েছিল অল্প সময়ের মধ্যেই। কাজ করেছেন ‘দ্য স্টেটসম্যান’-সহ বেশ কিছু সংবাদপত্রে। তবে, সম্পাদক হিসেবে তাঁর খ্যাতি গড়ে ওঠে ‘কলকাতা’ নামের সাময়িক পত্রকে ঘিরেই। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ‘কলকাতা’-তেই জরুরি অবস্থা ও তার সূত্রে অদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কড়া সমালোচনা করায় তিনি রাজরোষে পড়েন। এবং একটা বড় সময় পুলিশের চোখ এড়িয়ে লুকিয়ে থাকতে হয় তাঁকে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় ৬ মাস কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে কাটানোর পরে তাঁর মুক্তি মেলে।

জোতির্ময়বাবুর আর এক কীর্তি হল পালতোলা নৌকায় করে শ্রীলঙ্কা অভিযান। ১৯৭৭ সালে ‘মণিমেখলা’ নামে এক নৌকা তৈরি করিয়ে দুই সঙ্গীকে নিয়ে তিনি পাড়ি দেন শ্রীলঙ্কার দিকে। বিভিন্ন বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সে অভিযান অগ্রসর হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে তাঁদের ফিরে আসতে হয়। তবু কলকাতার মানুষ তাঁদের সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন সাহসিকতার জন্য।

প্রাবন্ধিক হিসেবে জ্যোতির্ময়বাবুর খ্যাতি মূলত জীবনানন্দ দাশকে পুনরাবিষ্কার এবং বিনয় মজুমদারের কবিতার উপরে দীর্ঘ ভাষ্য রচনার জন্য। কবি শম্ভু রক্ষিতকে বৃহত্তর সাহিত্যবলয়ে পরিচিত করানোর কাজটিও তিনিই করেছিলেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা দুই। রয়েছে গল্পগ্রন্থও। তার বাইরে লিখেছেন ‘আমার নাই বা হল পারে যাওয়া’ নামে আত্মস্মৃতি।

১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত জ্যোতির্ময়বাবু শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছিলেন। পড়িয়েছিলেন আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও। একটা দীর্ঘ সময় তিনি আমেরিকার নিউ জার্সিতে বাস করেছেন। তবে সম্প্রতি কলকাতাতেই থাকছিলেন।

বিচিত্র ভাবনার বিচিত্রকর্মা মানুষটি ছিলেন আদ্যন্ত রঙিন ব্যক্তিত্ব। বন্ধুবৎসল, আড্ডাপ্রিয় মানুষটির প্রয়াণে সাহিত্য জগতে শোকের ছায়া।

Bengali Poet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy