Advertisement
E-Paper

বাজিতে কত দূষণ, বোঝাল পর্ষদ-পুলিশ

কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে গত কয়েক বছর ধরেই তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। যার পিছনে রয়েছে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৩
 বাজি পোড়ানোয় রাশ টানতে অনুরোধ করা হয়েছে।

বাজি পোড়ানোয় রাশ টানতে অনুরোধ করা হয়েছে।

কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে গত কয়েক বছর ধরেই তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। যার পিছনে রয়েছে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ। সেই দূষণের তথ্যই শনিবার বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দাদের সামনে তুলে ধরলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তিনি জানান, শুধু শব্দবাজি নয়, আতসবাজি থেকেও ছড়ায় মারাত্মক দূষণ। তাই নিজেদের পরিবারের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই বাজিতে রাশ টানা উচিত নাগরিকদের।

প্রতি বছরই কালীপুজো ও দীপাবলির আগে বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করেন পুলিশ ও পর্ষদের কর্তারা। নানাবিধ উপদেশও দেন তাঁরা। কিন্তু সেই উপদেশে আদৌ কেউ কর্ণপাত করেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলে দেয় কালীপুজো ও দীপাবলির রাত। প্রতি বছরের রীতি মেনে বিভিন্ন আবাসন কমিটির সঙ্গে শনিবার তেমনই বৈঠকে বসেছিলেন পুলিশ ও পর্ষদের কর্তারা। বাজি পোড়ানোয় রাশ টানতে অনুরোধ করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, বাজি পোড়ানো যাবে রাত আটটা থেকে দশটা, এই দু’ঘণ্টার মধ্যে।

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এডিজি রাজেশ কুমার। শীর্ষ আদালত যে এ বার বাজি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থানার ওসি-দের কাঁধে দিয়েছে, সে কথা জানিয়ে দেন তিনি। বস্তুত, এ বার বাজি রুখতে না পারলে ওসি-দের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ ম়ঞ্চ’। কিন্তু পর্ষদের কর্তাদের ব্যাখ্যা, পরিবেশকর্মীরা মামলা না করলেও এমনিতেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ওসি-দের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হবে।

এ দিন অবশ্য বৈঠকে উপস্থিত নাগরিকদের অনেকেই পাল্টা প্রশ্ন করেন, কেন নিষিদ্ধ বাজি উৎপাদন এবং বিক্রি বন্ধ করা হচ্ছে না? কারও কারও প্রশ্ন ছিল, ‘‘তা হলে কি ফুলঝুরিও পোড়াতে পারব না?’’ ঠাকুরপুকুরের একটি আবাসন কমিটির বক্তব্য, ‘‘আমরা তো আলোর বাজির প্রদর্শনী করি। সেটাও বন্ধ করতে হবে?’’ পর্ষদের কর্তারা জানান, আলোর বাজি নিষিদ্ধ নয়। তবে সে ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ মশলা ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, সেটা দেখা জরুরি। সময়সীমাও মাথায় রাখতে হবে। কল্যাণবাবুর মন্তব্য, ‘‘ওই প্রদর্শনী করার আগে নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের বিষয়টাও মাথায় রাখা উচিত।’’

তবে অনেক আবাসন কমিটিই কিন্তু এই নয়া নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছে। ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি আবাসনের প্রতিনিধি পার্থপ্রতিম দে বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে কেউ যাতে লুকিয়ে বাজি ফাটাতে না পারেন, সে জন্য আবাসনের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী ভাবে নাইট ভিশন ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। আতসবাজি পোড়ানোর জন্য আবাসন চত্বরে জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে।’’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেও কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সবাই মিলে বাজি পোড়ানোর কথা বলা হয়েছে। দমদমের শ্যামনগরের একটি আবাসন কমিটির আর্জি, পুলিশ-প্রশাসনের তরফে এক বার বাসিন্দাদের গিয়ে বুঝিয়ে আসা হোক।

তবে শুধু আতসবাজির দূষণ নয়, কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দের দাপটও মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে। তা নিয়ে প্রতি বছরই প্রচুর অভিযোগ মেলে। কল্যাণবাবু জানান, শব্দদূষণ নিয়েও নজরদারি থাকবে। গত বছর পুলিশকে ৩৬০টি সাউন্ড মিটার দেওয়া হয়েছিল। এ বছর আরও ১৮০টি দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে বাজি নিয়ে প্রচার চালাতে বলেছেন কল্যাণবাবু। প্রয়োজনে সেই খরচ পর্ষদ দেবে। লালবাজার ইতিমধ্যেই বাজি সংক্রান্ত নির্দেশিকা লিফলেট হিসেবে বিলি করেছে। মাইকেও প্রচার চলছে কলকাতার বিভিন্ন পাড়ায়। বিভিন্ন থানা এলাকায় নিষিদ্ধ বাজিও আটক করা হচ্ছে। কলকাতার বিভিন্ন থানা নিজেদের এলাকায় বাজি পোড়ানো নিয়ে নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠকও করছে।

Poillution demonstration Police Pollution Control Board
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy