আবার আনন্দপুর থানা এলাকা গুলশন কলোনিতে চলল গুলি। ওই এলাকায় বন্দুক হাতে কয়েক জন দুষ্কৃতীর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পর পর গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই গুলি চালানোর ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগ। উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রও।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকাই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় গোলাগুলি। আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয়েরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। ঘরের দরজা, জানলায় ছিঁটকানি লাগান এলাকাবাসী। তবে কী কারণে গোলাগুলি চলেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এলাকার দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। বৃহস্পতিবার উত্তেজনা চরমে ওঠে। কেউ কেউ আবার দাবি করছেন, তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় আনন্দপুর থানার পুলিশ। শুক্রবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা না-ছড়ালেও থমথমে রয়েছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে খবর। শুক্রবার বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে এন্টালি থানা এবং নারকেলডাঙা থানা এলাকা থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে তারা। পুলিশের সন্দেহ, এই তিন জনই শুলশন কলোনির গোলাগুলির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ সন্দেহভাজনদের থেকে একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ৭এমএম পিস্তল এবং চারটি কার্তুজ উদ্ধার করেছে। অস্ত্র আইনের অধীনে দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এই ঘটনার নেপথ্যে আর কারা জড়িত, তার সন্ধান শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, শহরে একের পর এক অপরাধের ঘটনায় বার বার জড়িয়েছে গুলশন কলোনির নাম। ঘন জনবসতি এবং ঘিঞ্জি ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য নিয়ে লালবাজারের উদ্বেগ অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার সে কথা শোনা গিয়েছে পুলিশকর্তাদের বৈঠকে। কখনও ভরসন্ধ্যায় যুবককে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে খুন করা হচ্ছে, কখনও আবার দুই গোষ্ঠীর বিবাদে প্রকাশ্যেই হচ্ছে বোমা-গুলির বৃষ্টি। কখনও আবার ভিন্রাজ্যের পুলিশ এসে ওই এলাকায় হানা দিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে মাসের পর মাস ঘাঁটি গেড়ে থাকা একদল বাংলাদেশিকে। ওই এলাকাকে বিশেষ নজরে রেখেছে লালবাজারও। যদিও তার পরেও পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি, তা আরও এক বার প্রমাণ হল বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যার ঘটনায়।