Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পুলিশের জালে ছিনতাইকারী

কিন্তু অভিযোগকারী ওই যুবক জানান, দুষ্কৃতীদের এক জনের উচ্চতা ছিল অনেকটাই বেশি। যা কিছুটা ব্যতিক্রমী। তার মাথায় ছিল টুপি এবং দাঁতগুলি ক্ষয়াটে। অতিরিক্ত পানমশলা বা গুটখা খেলে যেমন হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিভ্রান্ত করে দিয়ে এক যুবকের আংটি ছিনতাই করে পালিয়েছিল দুই যুবক। ঘটনার তদন্তে পুলিশের সম্বল ছিল শুধুই অভিযুক্তদের চেহারার বিবরণ। সেই সূত্র ধরেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল কসবা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রাজেন্দ্রপ্রসাদ মাহাতো। বাড়ি কালীঘাট রোডে। মঙ্গলবার তাকে কেওড়াতলা শ্মশানের কাছ থেকে পাকড়াও করা হয়। ছিনতাই হওয়া তিনটি আংটিই তার কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে সেগুলি বন্ধক রেখে আট হাজার টাকা নিয়েছিল ধৃত দুষ্কৃতী। পুলিশের কাছে যুবকের দাবি, সে এক সময়ে ময়দানে ফুটবল খেলত। কলকাতা পুলিশের পাড়া ফুটবলেও পুরস্কৃত হয়েছিল। পরে মাদকের নেশায় টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইয়ের পথ ধরে।

লালবাজার সূত্রের খবর, শনিবার রাতে রাসবিহারী কানেক্টর ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন কসবার এনডিবি রোডের বাসিন্দা গৌরব রায়। রাজডাঙার কাছে আচমকাই তাঁর সামনে হাজির হয় দুই দুষ্কৃতী। তাঁকে ঘিরে ধরে তারা বলতে থাকে, গৌরব নাকি এলাকায় শ্লীলতাহানি করার পরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই লোকজন ডেকে এনে মারধর খাওয়ানো হবে তাঁকে৷ পুলিশ জানায়, ওই কথায় ঘাবড়ে যান গৌরব। তখন ওই দুই যুবক তাঁকে ধাক্কা মারতে মারতে একটি গলিতে নিয়ে যায় এবং ভয় দেখিয়ে তিনটি আংটি ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। পরের দিন, রবিবার, কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক। তদন্তকারীদের দাবি, রাজেন্দ্র ছাড়াও রাজা নামে আর এক দুষ্কৃতী ঘটনায় যুক্ত। তার খোঁজ চলছে। রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, ঘটনাস্থলের কোনও সিসিটিভি ছবি মেলেনি। কিন্তু অভিযোগকারী ওই যুবক জানান, দুষ্কৃতীদের এক জনের উচ্চতা ছিল অনেকটাই বেশি। যা কিছুটা ব্যতিক্রমী। তার মাথায় ছিল টুপি এবং দাঁতগুলি ক্ষয়াটে। অতিরিক্ত পানমশলা বা গুটখা খেলে যেমন হয়।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় তদন্ত কঠিন ছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে ওই তথ্য মেলার পরেই লালবাজারের অপরাধীদের রেকর্ড সংবলিত ‘ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং সিস্টেম’ অ্যাপের সাহায্য নেওয়া হয়। যাতে ওই ধরনের অপরাধ শহরে কারা করে, খোঁজ করা হয়। ওই অ্যাপ থেকে কয়েক জন সন্দেহভাজনকেও শনাক্ত করা হয়।’’

লালবাজার জানিয়েছে, কয়েক জন দুষ্কৃতীকে শনাক্ত করার পরে তাদের খোঁজ শুরু হয়। দেখা যায়, কালীঘাট-চেতলা-ভবানীপুর এলাকায় ছিনতাই বা ওই ধরনের অপরাধ করে এখন জামিনে রয়েছে রাজেন্দ্র। মঙ্গলবার বাড়িতে না থাকায় তাকে ধরতে পারেননি তদন্তকারীরা। ওই রাতেই ‘সোর্স’ মারফত জানা যায়, রাসবিহারী মোড়ের কাছে রয়েছে ওই অভিযুক্ত। পুলিশ পৌঁছলে পালানোর চেষ্টা করে রাজেন্দ্র। কিন্তু পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud Case প্রতারণা Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE