—প্রতীকী ছবি।
এমন ‘মিঠে-কড়া’ চোরের হদিস বোধহয় আগে পায়নি লালবাজার।
কষ্ট করে তালা ভেঙে টাকা-পয়সা নয়, সে ঝোলায় পুরে নিতে দামি চকলেট। ফেরার সময়ে সঙ্গে হাতিয়ে নিত খান কয়েক দামি কড়া সিগারেটের প্যাকেট।
পুলিশ জানিয়েছে, আলিপুরে পরপর দু’টি দোকানে চুরির ঘটনায় নেমে ওই চকলেট চোরের সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু দামি চকলেট এবং সিগারেটের প্যাকেট। দোকানের শাটার ভেঙে চুরির পরে নিজের জন্য কিছুটা সরিয়ে রাখলেও বেশির ভাগ চকলেট এবং সিগারেট কম দামে এলাকার অন্য ছোট দোকানে বিক্রি করে দিত সে।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃত ব্যক্তির নাম ইমতিয়াজ হোসেন। তার বাড়ি চেতলা থানা এলাকায়। রবিবার গভীর রাতে ইমতিয়াজকে গ্রেফতার করে আলিপুর থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয় দেশি-বিদেশি বেশ কিছু দামি চকলেট এবং সিগারেটও। তার আস্তানা থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে কিছু ঠান্ডা পানীয়ও। ধৃতকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৭ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
লালবাজার জানায়, গত মাসে আলিপুর থানা এলাকার রাজা সন্তোষ রায় রোডের একটি দোকানের শাটারের তালা ভেঙে চুরি করা হয় বেশ কিছু দামি চকলেট, সিগারেট এবং ঠান্ডা পানীয়ের ক্যান। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে কোনও সূত্র না পেলেও এলাকার সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। তাতে দেখা যায়, ঘটনার দিন ভোরে এক যুবক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। যা দেখেই সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। ওই যুবকের ছবি নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করতেই পুলিশ জানতে পারে, তার বাড়ি চেতলা এলাকায়। স্থানীয়দের থেকেই পুলিশ জানতে পারে, ইমতিয়াজ নামে ওই যুবক ইদানীং এলাকার বিভিন্ন ছোট দোকানে চকলেট আর সিগারেট সরবরাহ করছে।
তদন্তকারীরা জানান, এর পরেই রবিবার রাতে ইমতিয়াজের বাড়িতে হানা দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, ধৃত ইমতিয়াজ জেরার মুখে জানিয়েছে, শুধু দামি চকলেট এবং সিগারেটের প্যাকেটই ছিল তার লক্ষ্য। আলিপুর এলাকায় ওই ধরনের প্রচুর দোকান রয়েছে, যেখানে বিদেশি চকলেট এবং সিগারেটের প্যাকেট বিক্রি হয়। ধৃত ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছে, চুরির পরে তা নিয়ে যেতে কোনও অসুবিধে হত না। একই সঙ্গে তা সহজেই বিভিন্ন দোকানে কম দামে বিক্রিও করা যেত। তা নিয়ে কারও সন্দেহও হত না। ইমতিয়াজ এখনও পর্যন্ত ওই এলাকার তিনটি বড় দোকান থেকে শাটার ভেঙে ওই মাল চুরি করেছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দোকান ঠিক করে নেওয়ার পরে ভোরের দিকে সেখানে পৌঁছে যেত ইমতিয়াজ। শাটারের তালার কাছে কিছু ক্ষণ সে বসে থাকত। যাতে কারও সন্দেহ না হয়। এর পরে তালা কেটে শাটার অল্প তুলে ভিতরে ঢুকে যেত সে।
পরে সেখান থেকে চুরির জিনিস ব্যাগে ভরে বাইরে বেরিয়ে এসে হাঁটতে হাঁটতে চলে যেত নিজের গন্তব্যে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ভোরের দিকে হাঁটতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল তাঁদের। তার পরেই পুলিশের জালে পড়ে সেই চোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy