Advertisement
E-Paper

‘সরু’ চোরেদের কেরামতি দেখে হতভম্ব দুঁদে পুলিশও

কোমর ২০ ইঞ্চি, ছাতি ২৪ ইঞ্চি, উচ্চতা ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি। কোমর ১৮ ইঞ্চি, ছাতি ২২ ইঞ্চি, উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি।অনেকটা ‘হ-য-ব-র-ল’র সেই হিসেবের মতো। প্রথম জনের নাম রাজ। দ্বিতীয় জন রাজা। রাজের বয়স ১৮, রাজার ১৯। ‘চোর মহল’ জোড়া তাদের খ্যাতি। কারণ, অদ্ভুত পারদর্শিতায় নিজেদের এমন ছোটখাটো শরীর বাঁকিয়ে মাত্র ছ’ইঞ্চি ফাঁক দিয়ে দিব্যি গলে যেতে পারে তারা। ফলে দরজা বা জানলায় ওইটুকু ফাঁক থাকলেই অনায়াসে ঢুকে পড়ে বাড়ির ভিতরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০১:১০
অলঙ্করণ: মণীশ মৈত্র।

অলঙ্করণ: মণীশ মৈত্র।

কোমর ২০ ইঞ্চি, ছাতি ২৪ ইঞ্চি, উচ্চতা ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি।

কোমর ১৮ ইঞ্চি, ছাতি ২২ ইঞ্চি, উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি।

অনেকটা ‘হ-য-ব-র-ল’র সেই হিসেবের মতো।

প্রথম জনের নাম রাজ। দ্বিতীয় জন রাজা। রাজের বয়স ১৮, রাজার ১৯। ‘চোর মহল’ জোড়া তাদের খ্যাতি।

কারণ, অদ্ভুত পারদর্শিতায় নিজেদের এমন ছোটখাটো শরীর বাঁকিয়ে মাত্র ছ’ইঞ্চি ফাঁক দিয়ে দিব্যি গলে যেতে পারে তারা। ফলে দরজা বা জানলায় ওইটুকু ফাঁক থাকলেই অনায়াসে ঢুকে পড়ে বাড়ির ভিতরে।

সম্প্রতি সিঁথির কালীচরণ ঘোষ রোডের একটি বাড়িতে চুরির ঘটনার তদন্তে পুলিশের হাতে বুধবার টিটাগড় থেকে ধরা পড়েছে এই রাজ চৌধুরী ও রাজা শেখ। থানায় জেরার সময়ে তাদের দু’জনের এমন দক্ষতা দেখে চোখ কপালে পুলিশ অফিসারদের! ওই বয়সের ছেলে কী ভাবে মাত্র ছ’ইঞ্চি জায়গা দিয়ে গলে যেতে পারে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাটাই কঠিন— বলছেন তাঁদেরই এক জন। এই দুই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কিশোরের সঙ্গে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে দুই তরুণীও— আনোয়ারা বিবি ও রিয়া খাতুন।

পুলিশ জানায়, কালীচরণ ঘোষ রোডের ওই বাড়িটির শৌচাগারের জানলার অংশ ভেঙে, শরীর বেঁকিয়ে ঢুকে পড়ে রাজ ও রাজা। ভিতর থেকে তারা একটি দরজা খুলে দেওয়ার পরে রিয়া বাড়িতে ঢোকে। বাইরে পাহারায় ছিল আনোয়ারা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত চার জনই টিটাগড়ের আলি হায়দার রোডের রেল বস্তি এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এই দলটি ঘুরে ঘুরে চুরি করে। প্রথমে মহিলাদের পাঠিয়ে কোন বাড়ি খালি রয়েছে, কোন বাড়িতে শুধু বয়স্করা থাকেন— সে সব সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হয়। তার পরে ঠিক হয় ‘টার্গেট’। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েক জন মহিলাকে এই কাজে লাগানো হয়— এক এক জনকে এক এক সময়ে।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীও এই কাজে পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘এ রকম কয়েক জন ব্যবসায়ী চুরির মাল সস্তায় কিনে এবং বেশি দামে তা বিক্রি করে এলাকায় মার্বেল বসানো দোতলা বাড়িও বানিয়ে ফেলেছে।’’ সিঁথির ঘটনায় চুরি হওয়া মাল রাজদের কাছ থেকে কেনার অভিযোগে এমনই এক ব্যবসায়ী, স্বর্ণকার মহম্মদ নাজিরুদ্দিন ওরফে লাড্ডুকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানায়, রবিবার কালীচরণ ঘোষ রোডের বাসিন্দা হরিশঙ্কর পাল থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর কথায়, গত ২৯ এপ্রিল তিনি স্ত্রীকে নিয়ে হায়দরাবাদে ছেলের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলেন। গত শুক্রবার সেখানে বসেই খবর পান, তাঁর বাড়িতে আলমারি ভেঙে গয়না, টাকা-সহ লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে। শনিবারই তড়িঘড়ি কলকাতায় ফেরেন তিনি।

এ দিন হরিশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমার শৌচাগারের জানলার ফাঁক বড়জোর ৮ ইঞ্চি হবে। আমিও ফিরে এসে বুঝতে পারি যে, সেখান দিয়েই চোরেরা ঢুকে আমার বাড়ির পিছনে বাগানের দিকের দরজা খুলে দিয়ে বাকিদের ভিতরে ডেকে নেয়।’’

হরিশঙ্করবাবু বেড়াতে যাওয়ার সময়ে বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন কেয়ারটেকার সুজয় নাথকে। তাঁর ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুজয়বাবুর অবশ্য দাবি, ঘটনার সময়ে তিনি ওই বাড়িতে ছিলেন না।

Police Theives Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy