Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Extortion

Bidhannagar Municipal Corporation: কোঅর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে তোলাবাজির এফআইআর

বিধাননগর পুরসভার এক কোঅর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও মারধরের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করে কেস চালু করল বাগুইআটি থানার পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১১
Share: Save:

আদালতের নির্দেশে বিধাননগর পুরসভার এক কোঅর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও মারধরের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করে কেস চালু করল বাগুইআটি থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যবসায়িক লেনদেন ঘিরে দুই ব্যক্তির মধ্যে গোলমাল শুরু হয়েছিল বছরখানেক আগে। তাতে নাম জড়ায় বিধাননগর পুরসভার দুই কোঅর্ডিনেটরের। এক কোঅর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়নি বলে বারাসত আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল বাগুইআটি থানা। অভিযোগ, পরে পুরনো মামলা প্রত্যাহারের জন্য এক ব্যবসায়ীর উপরে চাপ সৃষ্টি, তাঁকে মারধর-সহ নানা ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে অন্য এক কোঅর্ডিনেটরের। আদালতের নির্দেশে বাগুইআটি থানা রতন মৃধা নামে ওই কোঅর্ডিনেটর এবং সুশান্ত ঘোষ নামে এক ব্যক্তি-সহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, মারধর, ভয় দেখানো-সহ সাতটি ধারায় এফআইআর করে কেস চালু করেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রতনবাবু।

বাগুইআটির তেঘরিয়া এলাকার লিচুবাগানের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী চন্দ্রনাথ ঘোষের আইনজীবী অরিজিৎ রায় জানান, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে অভিযুক্ত সুশান্তবাবুর ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে গোলমাল চলছিল। অরিজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘সুশান্তবাবু দুই নেতাকে ডেকেছিলেন। প্রথম জন আমার মক্কেলকে ধমকে ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় জনের নাম রতন মৃধা। তিনি এবং সুশান্তবাবু মামলা প্রত্যাহার করার জন্য প্রথমে আমার মক্কেলকে বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এক রাতে ডেকে পাঠান। চন্দ্রনাথবাবু রাতে যাওয়ার সাহস পাননি। পরের দিনই দুই অভিযুক্ত মক্কেলের খাটালে চড়াও হন। তাঁকে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়, বুকে লাথি মারা হয়। আমার মক্কেল মামলা করায় তাঁকে ২৬ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়। টাকা না দিলে বিপদ আছে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।’’

কিসের ২৬ লক্ষ টাকা?

চন্দ্রনাথবাবু জানান, সুশান্তবাবুর সঙ্গে তাঁর লেনদেন হত। কিন্তু কোনও লিখিত হিসাব থাকত না। চন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি সুশান্তের থেকে টাকা পেতাম। বহু দিন ধরে গড়িমসি করছিল। উল্টে এক দিন জানায়, ও আমার থেকে ২৬ লক্ষ টাকা পায়। তার পরে সেই টাকা আদায়ের জন্য সুশান্ত দুই নেতাকে ডেকে আনে। খাটালে এসে সুশান্ত বুকে লাথি মেরেছিল।’’ তিনি জানান, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে তিনি খাটাল ছেড়ে দেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘খাটালটি রতন মৃধার ওয়ার্ডে ছিল। জুলাই মাসে মারধরের পরে অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে তিন হাজার টাকা করে নিত ওঁদের লোকজন। টাকা না দিলে ব্যবসা করা যাবে না, তা-ও মারধরের সময়ে ওঁরা জানিয়েছিলেন।’’

অন্য দিকে সুশান্তের পাল্টা দাবি, ‘‘চন্দ্রনাথ আমার থেকে ২৬ লক্ষ টাকা ধার করেছিল। বলেছিল, গরু বিক্রি করে ধার শোধ করবে। কিন্তু করেনি। এ বার আমি প্রতারণার মামলা করব ওর বিরুদ্ধে।’’

চন্দ্রনাথের আইনজীবী অরিজিৎবাবুর দাবি, ‘‘পুলিশ প্রথমে লিখিত অভিযোগ নেয়নি। আমার মক্কেল বাধ্য হয়ে দু’বার আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত দ্বিতীয় বার নির্দেশ দেওয়ার পরে পুলিশ এফআইআর করেছে। তাতেও লেগেছে তিন মাস।’’ যদিও বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিকের দাবি, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরে নিয়ম মতোই সব করা হয়েছে।

অন্য দিকে, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর রতন মৃধার দাবি, ‘‘নির্বাচনের আগে এটা চক্রান্ত। পুলিশ তো আমার সঙ্গে যোগাযোগই করেনি। তা হলে কী ভাবে মামলা চালু হল? এক কোঅর্ডিনেটরের আত্মীয়ের টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না ওই ব্যক্তি। কোঅর্ডিনেটরের অনুরোধেই আমি কথা বলতে যাই। কেউ ওঁকে মারধর করেনি। টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’’

রতনের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘কেউ সমস্যায় পড়লে বিধায়কের কাছে আসতেই পারেন। রতনের কোঅর্ডিনেটর হওয়াটা কারও কারও কাছে ঈর্ষার কারণ। রতন প্রচুর সামাজিক কাজ করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE