Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Picnic

শীতের ময়দানে ভিড় সামলাতে নির্দেশিকার প্রতীক্ষায় পুলিশ

ময়দানে এখনও পর্যন্ত তেমন ভিড় দেখা যায়নি, তবে আগামী দিনে যে ভিড় বাড়বে বলেই আশঙ্কা পুলিশের।

কোন পথে: প্রতি শীতে ময়দানের চেনা ছবি (বাঁ দিকে)। কোভিড-বিধি ভেঙে সোমবারের ময়দানি আড্ডা। যা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে মরসুমের আগামী দিনগুলিতে কী ভাবে রাশ টানা যাবে জমায়েতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কোন পথে: প্রতি শীতে ময়দানের চেনা ছবি (বাঁ দিকে)। কোভিড-বিধি ভেঙে সোমবারের ময়দানি আড্ডা। যা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে মরসুমের আগামী দিনগুলিতে কী ভাবে রাশ টানা যাবে জমায়েতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:২৬
Share: Save:

উৎসবের মরসুম শেষ। তবে শীতের মরসুমেও ফের বিভিন্ন জায়গায় জমায়েতের আশঙ্কা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসক মহল। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি এবং বড়দিনের ছুটিতে সপরিবার শহরে বেরিয়ে পড়া জনতা কতটা কোভিড-বিধি মানবে, আপাতত সেই চিন্তাই স‌ংক্রমণ রোখার পথে বড় বাধা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শীতকালে ময়দানে জনতার ঢল কী ভাবে সামলানো যাবে বা সেখানে কত মানুষ জড়ো হতে পারবে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা নেই। কোভিড আবহে ময়দানের এই ভিড় নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতা আগে না থাকায়, তা কী ভাবে সম্ভব, ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন উঠছে। অতএব, কার্যত অভিভাবকহীন ময়দান, তার ভিড়ের আশঙ্কা জিইয়েই রাখছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সংক্রমণ এড়াতে এ বছর পুজো মণ্ডপগুলিকে কন্টেনমেন্ট জ়োন বলে ঘোষণা করে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে দর্শনার্থীদের ভিড় অনেকটাই এড়ানো গিয়েছিল। কিন্তু আসন্ন বড়দিন বা নববর্ষের সময়ে ভিড় কী ভাবে সামলানো হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি। এই সময়ে ময়দানে আসা লোকজনের সংখ্যাও এক ধাক্কায় বেড়ে যায় অনেকটাই। পুলিশের দাবি, কোভিড পরিস্থিতিতে ময়দানের মতো খোলা জায়গায় ভিড় যাতে না হয়, সে দিকেও নজর রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তাদের মতে, ময়দানে এখনও পর্যন্ত তেমন ভিড় দেখা যায়নি, তবে আগামী দিনে যে ভিড় বাড়বে বলেই আশঙ্কা পুলিশের।

বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে ময়দানের সেই ভিড় কী করে সামলানো যাবে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও নির্দেশ নেই। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, করোনার প্রথম ধাপে লকডাউনের সময় থেকেই রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে শীতের মরসুমে কী ভাবে ময়দানে ভিড় জমানো জনতাকে সামলাবে পুলিশ, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, শীতের উৎসবের কথা মাথায় রেখে প্রশাসন ফের কোনও নির্দেশিকা জারি করলে সেই মতোই ব্যবস্থা নেবে তারা। তবে ময়দানের মতো কোনও খোলা জায়গায় একসঙ্গে কত লোক জড়ো হতে পারে, সেই ধারণা পুলিশেরও নেই। তাই দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা এবং মাস্ক পরার সচেতনতার প্রচারেই জোর দিচ্ছে পুলিশ।

কলকাতার ফুসফুস ময়দানের মালিকানা আদতে সেনাবাহিনীর হাতে। তবে সেখানে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বা ভিড় সামলানো সংক্রান্ত দায়িত্ব রয়েছে কলকাতা পুলিশের হাতে। সেনা সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের হাতে আইনশৃঙ্খলা থাকায় শীতের মরসুমে সেখানে লোক সমাগম কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেটা প্রশাসনই ঠিক করবে। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কোনও ভূমিকা নেই। তবে সরকারি নির্দেশ মেনেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলেই মনে করছে সেনা।

অন্য দিকে কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, সাধারণত সভা বা রাজনৈতিক সমাবেশে কত লোক সমাগম হল, তার পরিসংখ্যান রাখে পুলিশ। উৎসবের সময়ে ময়দানে কত লোক আসে, তার কোনও হিসেব পুলিশ নেয়নি। তবে তা কখনওই রাজনৈতিক সমাবেশগুলিতে আগত জনসমাগমের মতো বিশাল হয় না।

পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “পুরসভার কাজ হল মানুষকে সচেতন করা। শুধু পুরসভা নয়, পুলিশ-প্রশাসনও এই একই কাজ করে চলেছে। কিন্তু মানুষকে ঘরে রাখতে কঠোর আইনের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE