Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বড়বাজারের ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ড
Murder

Murder: ‘আততায়ীদের’ পথ দেখানো বাইক উদ্ধার

এখনও পর্যন্ত পুলিশ আততায়ীদের গাড়িটি উদ্ধার করতে পারেনি। অধরা রয়েছে এফআইআরে নাম থাকা অভিযুক্ত থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সন্দেহভাজনেরাও।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলের খুনের পূর্ণাঙ্গ কিনারা করার ‘কাছাকাছি’ পৌঁছনো গিয়েছে, দাবি করলেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, সব্যসাচী খুন হওয়ার ঠিক আগে, পৈতৃক বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নার দেরিয়াপুরে ছিলেন তাঁর খুড়তুতো ভাই সোমনাথও।

বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে পুলিশ একটি মোটরবাইক উদ্ধার করে দাবি করেছে, তাতে চেপেই সোমনাথ আততায়ীদের গাড়িকে পথ চিনিয়ে দেরিয়াপুরের বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসেন। মোটরবাইকটি চালান সোমনাথের বন্ধু সোনারপুরের এক যুবক। মোটরবাইকটির মালিক ওই যুবকের বাবা। শুক্রবার ওই যুবক আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন।

পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন শুধু বলেন, “একটি মোটরবাইক উদ্ধার হয়েছে। মোটরবাইকের মালিককে নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।’’

তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক ভাবে তাঁরা মনে করছেন, সোমনাথের সঙ্গী ওই যুবক ২২ অক্টোবর রাতে ওই খুনের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তদন্তকারী দলের এক সদস্যের দাবি, “বৃহস্পতিবার রাতে কথা বলার জন্যে ওই যুবকের বাড়ি যাওয়া হয়েছিল। তখনও তিনি খুনের কথা জানতেন না। এমনকি, রায়নার দেরিয়াপুরের প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি সোমনাথের সঙ্গে যে সেখানে গিয়েছিলেন তা কোনও রকম রাখঢাক না করেই জানান। মোটরবাইকটি দেখিয়ে তিনি তদন্তে সাহায্য করবেন বলেও জানান।’’

কী জন্যে কলকাতা থেকে মোটরবাইকে সোমনাথকে চাপিয়ে দেরিয়াপুরে এসেছিলেন ওই যুবক?

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বি টেক করা ওই যুবক এখন বিশেষ কোর্সের পড়াশোনা করছেন। তাঁরা অবাঙালি হওয়ায় বাংলা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খুনের খবর তাঁর নজরে আসেনি। দার্জিলিংয়ের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সোমনাথের সহপাঠী ছিলেন। পরে, মোটরবাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশার সুবাদে সোমনাথের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।

তদন্তকারীদের দাবি, ওই যুবক তাঁদের জানিয়েছেন, ২২ অক্টোবর সকালে পৈতৃক বাড়িতে ঘুরে আসার পরিকল্পনা করেন সোমনাথ। সে মতো সোমনাথকে মোটরবাইকে তুলে দেরিয়াপুরে রওনা দেন তিনি। তাঁদের পিছনে যে ‘সুপারি কিলার’-দের গাড়ি আসছে, তা তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি। ডানকুনির কাছে একটি ধাবায় খাওয়াদাওয়ার পরে, ওই গাড়ির ‘যাত্রী’দের খাওয়ার টাকা সোমনাথকে মেটাতে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। তদন্তকারীদের কাছে তিনি দাবি করেন, প্রশ্ন করায় সোমনাথ তাঁকে জানিয়েছিলেন, ওঁরা তাঁর কারখানার কর্মী। পৈতৃক বাড়িতে কিছু কাজ করানোর জন্য তিনি তাঁদের নিয়ে যাচ্ছেন। দেরিয়াপুরে তাঁরা ১৫ মিনিটের মতো থাকলেও, সোমনাথ তাঁকে পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাননি বলে তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেন ওই যুবক।

এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “মোটরবাইকটি আগেই চিহ্নিত হয়েছিল। সে সূত্র ধরেই বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নম্বর জোগাড় করে মোটরবাইকের মালিকের কাছে পৌঁছনো গিয়েছে।’’ তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ আততায়ীদের গাড়িটি উদ্ধার করতে পারেনি। অধরা রয়েছে এফআইআরে নাম থাকা অভিযুক্ত থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সন্দেহভাজনেরাও। বহু চেষ্টা করেও সোমনাথ বা তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তদন্তকারীদের ধারণা, সম্ভবত তাঁরা অন্য রাজ্যে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder probe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE