Advertisement
E-Paper

সুজনেরা এলেন কোন পথে, হতবাক পুলিশ

ত্রিস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, র‌্যাফ, ইএফআর, কমব্যাট— সবই ছিল। তা সত্ত্বেও দুপুর ১২টার পরে কার্যত বিনা বাধায় নবান্নের উত্তর গেটে পৌঁছল তিনটি গাড়ি। নেমে এলেন সুজন চক্রবর্তী, অশোক ভট্টাচার্য, আনিসুর রহমান-সহ অন্তত ১২ জন বাম বিধায়ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০২:২৩
দুর্গ: নবান্নের সামনে পুলিশি বলয়। সোমবার। ছবি: প্রদীপ আদক

দুর্গ: নবান্নের সামনে পুলিশি বলয়। সোমবার। ছবি: প্রদীপ আদক

ত্রিস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, র‌্যাফ, ইএফআর, কমব্যাট— সবই ছিল। তা সত্ত্বেও দুপুর ১২টার পরে কার্যত বিনা বাধায় নবান্নের উত্তর গেটে পৌঁছল তিনটি গাড়ি। নেমে এলেন সুজন চক্রবর্তী, অশোক ভট্টাচার্য, আনিসুর রহমান-সহ অন্তত ১২ জন বাম বিধায়ক। নবান্নের গেটে পুলিশকর্মীরা প্রথমে হতচকিত হয়ে কিছু বলেই উঠতে পারলেন না। মিনিট পাঁচেক বাদে হুড়মুড়িয়ে পুলিশ এগিয়ে গেল বিধায়কদের আটকাতে। সুজনবাবুরা তখন নবান্নে কার্যত ঢুকে পড়েছেন।

পুলিশ আটকাতেই তর্কাতর্কি। পরে ধস্তাধস্তি। সুজনবাবুর হাতে ভেঙে বেরিয়ে আসে নবান্নের একটি লোহার রডও। শেষে আসে আরও পুলিশ। নবান্নের ভিতরে বাম বিধায়কদের ঢুকে পড়া কোনওক্রমে ঠেকানো যায়। জোর করে তাঁদের তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে। গ্রেফতার করে নেওয়া হয় শিবপুর থানায়। অভিযোগ, সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে বসিয়ে রাখা হয় সুজনবাবুদের। সন্ধ্যায় ফের তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধে পুলিশের। তার পরেই ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁদের ছাড়া হয়।

‘নবান্ন অভিযান’ শুরু হওয়ার আগেই সুজনবাবুরা সরাসরি নবান্নে এসে যাওয়ায় পুলিশ দিশাহারা হয়ে পড়ে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে যান চলাচল কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাড়ে ১২টা থেকে ঘণ্টা তিনেক দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে হাওড়ার যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে পড়ে। নবান্নের চারপাশও ছিল সুনসান।

এ দিন বামেদের নবান্ন পৌঁছনো আটকাতে সকাল থেকে নবান্নের চারপাশে দু’কিলোমিটার এলাকায় কলকাতা ও হাওড়া— দুই পুলিশ কমিশনারেটের প্রায় দু’হাজার কর্মীকে মোতায়েন করা হয়। নবান্নে আসার সমস্ত গলিতে শুরু হয় তল্লাশি। স্থানীয় বাসিন্দারাও ‘কোথায় যাচ্ছেন’, ‘কেন যাচ্ছেন’ জাতীয় প্রশ্নের সদুত্তর দিলে তবে যাতায়াতের অনুমতি পাচ্ছিলেন। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ওঠার মুখেও সব গাড়িতে নজরদারি করে পুলিশ।

তা সত্ত্বেও বিধায়ক স্টিকার লাগিয়ে সুজন চক্রবর্তীরা নবান্নে এলেন কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন পুলিশের অন্দরেই। এর ঘণ্টাখানেক পরে নবান্নের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখেন ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা ও হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। বিধায়কদের গাড়ি কী করে টোল প্লাজা থেকে নবান্ন এল, ওই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার তেনজিং ভুটিয়ার কাছে তা জানতে চেয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার।

এর আগে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী মন্দিরতলা ছাড়িয়ে নবান্নের দিকে কিছু দূর এসে গ্রেফতার হন। মাস কয়েক আগে বিজেপি-র কয়েক জন নেতা-সমর্থক নবান্নের একেবারে সামনে এসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তাঁরাও নবান্নে ঢুকতে পারেননি। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘নবান্নের সামনে সুজনবাবুদের চলে আসাটা বিজেপি কর্মীদের আসার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’

তবে এই ঘটনাকে আমল দিতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম অস্তিত্ব হারিয়েছে। নিজেই বিপন্ন। তাই নবান্ন অভিযান। সংবাদমাধ্যমে ছবি তুলতে নেতারা এখানে নাটক করছেন।’’

Police barricades Nabanna CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy