প্রতীকী ছবি।
এ রাজ্যে পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। আলিপুর থানায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পুলিশকে টেবিলের তলায় লুকোতে পর্যন্ত হয়েছিল।
কিন্তু এ বার হেলমেট না পরে মোটরবাইক চালানোর অভিযোগে স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ভাগ্নেকে আটক করে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী শুধু আক্রান্তই হননি, অভিযুক্তকে ধরে থানায় নিয়ে গেলে সেখানে তিনি আর এক পুলিশকর্মীর উপরেও চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, এক মন্ত্রীর নাম করে পুলিশকে হুমকি ও গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। আক্রান্ত পুলিশকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গোলাবাড়ি থানা এলাকার ডবসন রোডে। ধৃতের নাম সোনু সাহনি। তিনি হাওড়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা সন্তোষ সাহনির ভাগ্নে। সন্তোষের স্ত্রী লক্ষ্মী সাহনি ওই ওয়ার্ডেরই তৃণমূল কাউন্সিলর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ডবসন রোডে এসি মার্কেটের সামনে ডিউটি করছিলেন গোলাবাড়ি থানার এএসআই অমিতকুমার দাস। অমিত জানান, ডিউটি করার সময়ে তিনি দেখেন সালকিয়ার দিক থেকে একটি মোটরবাইক বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসছে। চালকের পিছনে বসে আরও দু’জন আরোহী। তিন জনের কারও মাথাতেই হেলমেট নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ভাবে বাইকটিকে আসতে দেখে দূর থেকেই চালককে গাড়ি থামাতে বলেন অমিত। কিন্তু অভিযোগ, গাড়ি না থামিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন সোনু। ওই এএসআই মোটরবাইকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে কোনও ভাবে সেটিকে আটকান। অমিতের অভিযোগ, তিনি চালকের কাছে গাড়ির সব নথিপত্র দেখতে চান। কিন্তু কাগজপত্র দেখানো দূরের কথা, কোন সাহসে পুলিশ তাঁদের আটকেছে এই প্রশ্ন তুলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন সোনু। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় অমিতের মুখে ঘুসিও মারেন তিনি। এর পরে আরও কয়েক জন পুলিশকর্মীর সাহায্যে কোনও রকমে অভিযুক্তকে ধরে থানায় নিয়ে আসা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘সন্তোষের ‘বাউন্সার’ হিসেবে ওঁর সঙ্গে ঘুরে বেড়ান ওই যুবক। এ দিনও নিজের মামা ও মামিমার পরিচয় দিয়ে পুলিশের গায়ে হাত তোলেন।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, সোনু থানায় ঢুকে ফের আর এক প্রস্ত গালিগালাজ শুরু করেন। টেবিলে ঘুসি মেরে এক মন্ত্রীর নাম করে বলতে থাকেন, তিনি তাঁর কাছের লোক। অভিযোগ, এর পরেই ওই যুবক আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়েন থানার এসআই রঞ্জন চাতিয়ালের উপরে। তাঁর মুখেও সজোর ঘুসি মারেন। এ নিয়ে প্রায় দক্ষযজ্ঞ বেধে যায় থানার মধ্যে। পরে আরও পুলিশকর্মী এসে ওই যুবককে ধরে লক-আপে
ঢুকিয়ে দেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধর-সহ সরকারি কাজে বাধাদান সংক্রান্ত জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশকে মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে ভাগ্নে তথা নিজের বাউন্সারের এই কীর্তি নিয়ে সন্তোষ বলেন, ‘‘ও আমার নিজের ভাগ্নে নয়। দূর সম্পর্কের ভাগ্নে। নিজের ভাগ্নে হলে পুলিশের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতাম। তাই ওর এ ধরনের কাজের দায়িত্ব নেব কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy