রিমি দাস
এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম বুলবুল দাস। বাড়ি সরশুনা থানা এলাকার দক্ষিণ বেহালা রোডে। এই ঘটনায় মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তরুণীর স্বামী ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে পণঘটিত বধূ মৃত্যুর ধারায় মামলা রুজু করেছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত শাশুড়ি মঙ্গলা দাসকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর সাতেক আগে বেহালার বি জি প্রেস এলাকার বাসিন্দা রিমি দাসের (৩০) সঙ্গে বুলবুলের বিয়ে হয়। দু’জনেই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বিয়ের মাস ছয়েক পরে বুলবুল রিমিকে নিয়ে পর্ণশ্রী থানা এলাকার গোয়ালাপাড়া রোডে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩১ আগস্ট রাতে রিমিকে সেখানেই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় শাড়ি বেঁধে ঝুলতে দেখেন বাড়ির মালিক। তিনিই ফোন করে রিমির বাড়িতে খবর দেন। রিমির ভাই এসে দরজা ভেঙে দিদিকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মৃতার মা মীনা চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শাশুড়ি পণের দাবিতে অত্যাচার করত মেয়ের উপরে। বিয়ের কয়েক মাস পরে পর্ণশ্রী থানায় জেনারেল ডায়েরিও করা হয়েছিল। মেয়েকে সুখে রাখতে জামাইয়ের দাবিমতো দু’টো মোটরবাইক-সহ নগদ তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। এত করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না! সন্তান না হওয়ার জন্যও নানা ভাবে মেয়েকে অপমান করত ওরা।’’ দশম শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে সংসার মীনাদেবীর। একটি ছোট দোকান চালান তিনি। মীনাদেবী বলেন, ‘‘ধারদেনা করে জামাইকে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার পরে সুদের টাকা মেটাচ্ছি এখনও।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘শনিবার রাতে মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জামাইকে অন্য মহিলার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। প্রতিবাদ করলে উল্টে ওকে মারধর করা হয়। দিনের পর দিন লাঞ্ছনা, অপমান সহ্য করতে না পেরেই মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ওই দু’জনের কঠোর শাস্তি হোক, এখন এটাই চাইছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘শনিবার গভীর রাতে মেয়ে একলা শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরে। জামাই সঙ্গে আসেনি। উল্টে রাতে জামাই আমাকে ফোন করে মেয়ের নামে কটূক্তি করে। জামাই সঙ্গে ফিরে এলে মেয়েটা এমন ঘটনা ঘটাতে পারত না। পরিকল্পনা করেই মেয়েকে আত্মহত্যা করতে মদত দিয়েছে ওরা।’’
সোমবার রাতে মীনাদেবী তাঁর জামাই ও বেয়ানের বিরুদ্ধে পর্ণশ্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার সকালে বুলবুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy