Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের জালে ‘বিষাক্ত’ দুষ্কৃতী

ছিনতাইবাজের ছবি দেখে অভিযোগকারীরা শনাক্ত করতেই চমকে উঠেছিলেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। ভাবছিলেন, “কে পাকড়াও করবে একে? কাছে গেলেই তো বিপদ!” গুলি-বন্দুক বা ছুরি নয়, বিপদ রয়েছে রাজেশ মাহাতো ওরফে পাপ্পু নামে ওই ছিনতাইবাজের দাঁতে!

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৫
Share: Save:

ছিনতাইবাজের ছবি দেখে অভিযোগকারীরা শনাক্ত করতেই চমকে উঠেছিলেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। ভাবছিলেন, “কে পাকড়াও করবে একে? কাছে গেলেই তো বিপদ!”

গুলি-বন্দুক বা ছুরি নয়, বিপদ রয়েছে রাজেশ মাহাতো ওরফে পাপ্পু নামে ওই ছিনতাইবাজের দাঁতে!

পুলিশ সূত্রের খবর, মাদকাসক্ত ওই দুষ্কৃতীর কাছে গাঁজা-হেরোইন নেহাতই শিশু। মরফিন ইঞ্জেকশন থেকে টিকটিকির লেজ কিছুই বাদ যায় না। “রক্ত এমনই বিষিয়েছে যে কামড়ে দিলে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় নিশ্চিত”, বলছেন এক পুলিশ অফিসার। পুলিশের দাবি, সপ্তাহ দুয়েক আগেই কালীঘাটের দু’টি নেড়ি কুকুরকে কামড়ায় পাপ্পু। পর দিনই দু’টিকে মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

মঙ্গলবার রাতে যাদবপুর থানা এলাকায় পাপ্পুর খপ্পরে পড়েন দুই যুবক। তাঁদের অবশ্য কামড়ে দেয়নি সে। বরং হুমকি দিয়ে ৫০০০ টাকা, দু’টি মোবাইল ও একটি সোনার বালা নিয়ে চম্পট দেয়। যাদবপুর থানায় অভিযোগকারীরা জানান, ছিনতাইবাজ তোতলা। চেহারার বর্ণনাও দেন তাঁরা। পুলিশ দাগি দুষ্কৃতীর ছবির তালিকা দেখালে পাপ্পুকে শনাক্ত করেন অভিযোগকারীরা।

পুলিশ জানায়, আগেও কয়েক বার ধরা পড়েছে পাপ্পু। প্রতি বারই তাকে ধরতে গিয়ে সমস্যা হয়। এক পুলিশকর্মীর কথায়, “এমনিতেই চর্মরোগ। তার উপরে কামড় দিলে রক্ষে নেই। ওকে পাকড়াও করা বেশ ঝক্কির।” তবে এ বার পাপ্পুকে পাকড়াও করতে এগিয়ে আসেন সুমন বিশ্বাস ও ধীমান বৈরাগী নামে যাদবপুর থানার দুই তরুণ অফিসার।

লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাপ্পুকে কথায়-কথায় এক জায়গায় ডাকা হয়। তার পরে ভুলিয়ে-ভালিয়ে থানা পর্যন্ত নিয়ে আসেন ওই দুই অফিসার। থানায় ঢুকতেই পিছন থেকে প্যাঁচ কষে ধরা হয় তাকে। বুধবার পাপ্পুকে আলিপুর আদালতে পাঠানো হয়। থানায় রাখার ঝক্কি এড়াতে তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানায় পুলিশ। আদালত তা মঞ্জুর করেছে।

পুলিশ জানায়, আদতে বাগনানের বাসিন্দা পাপ্পুর ডেরা কালীঘাটের যৌনপল্লিতে। পেশা ছিনতাই। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোক দেখেই শিকার চিনে নেয় পাপ্পু। তার পরে কখনও তার বোনকে, কখনও স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে হুমকি দেওয়া শুরু করে। হুমকি দেওয়ার ফাঁকেই ছিনতাই করে পালায় সে। পুলিশ জানায়, এ বারেও একই ছকে কাজ হাসিল করেছিল সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা গেল তাকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধরা পড়ে বেশ চটেছে পাপ্পু। আদালতে যাওয়ার আগে কয়েক জন পুলিশকর্মীকে কামড়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE