E-Paper

পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি নাবালিকা ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা! ধৃত ১

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ আরশাদ। ওই কিশোরীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তবে ওই নাবালিকা ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলেও কেন পরিবারের সদস্যদের নজরে আসেনি, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৪৩
An image of Pregnancy

—প্রতীকী চিত্র।

দীর্ঘ দিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিল কিশোরী। দিন দিন পেট ফুলে যাচ্ছিল তার। ব্যথা বাড়তে থাকায় নাবালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যেরা। আর সেখানেই পরীক্ষা করানোর পরে জানা গেল, ১৪ বছরের ওই কিশোরী ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা! হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় কড়েয়া থানায়। তার পরে তদন্তে নেমে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে কড়েয়া থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ আরশাদ। ওই কিশোরীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তবে ওই নাবালিকা ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলেও কেন পরিবারের সদস্যদের নজরে আসেনি, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে বিহারের বাসিন্দা আরশাদ তিলজলা এলাকায় থাকেন। শনিবার রাতে তাঁকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিকে, দিনকয়েক আগেই এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে ওই নাবালিকা। সদ্যোজাতের ডিএনএ পরীক্ষার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

তিলজলা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। ওই কিশোরী দীর্ঘ দিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছে বলে পরিবারের তরফে চিকিৎসকদের জানানো হয়। তাঁরা আরও জানান, পেট দিন দিন ফুলে যাচ্ছে। দ্রুত নাবালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হলে দেখা যায়, সে ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি পরিবারকে জানানো হলে তাঁরা কিছুই জানেন না বলে চিকিৎসকদের কাছে দাবি করেন। এর পরেই হাসপাতালের তরফে ফোন করা হয় কড়েয়া থানায়। হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে প্রথমে কিশোরীর সঙ্গে কথা বলেন থানার তদন্তকারী আধিকারিকেরা। পরে কড়েয়া মহিলা থানায় পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, এক যুবকের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে সম্পর্ক ছিল তার। স্কুল পালিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে ঘুরতেও যেত সে। যদিও কয়েক মাস ধরে তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখছিলেন না ওই যুবক। তবে সে যে অন্তঃসত্ত্বা, তা ওই যুবক জানতেন না বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছে নাবালিকা। তার পরিজনদেরও দাবি, তাঁরাও ঘুণাক্ষরে কিছু টের পাননি।

এ দিকে কিশোরীর কথায় সূত্র ধরেই আরশাদ নামে ওই যুবকের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। বছর একুশের আরশাদ পেশায় গাড়িচালক। তিলজলা এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। শনিবার ভোরে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিনকয়েক আগে হাসপাতালে যে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে কিশোরী, তার ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে আদালতের অনুমতি নিয়ে কিশোরী ও তার সদ্যোজাতকে হোমে রাখা হবে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর।

কিন্তু, ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হলেও কেন তা বুঝতে পারলেন না পরিবারের সদস্যেরা, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রয়োজনে নাবালিকার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘জেরায় ওই যুবক দাবি করেছেন, নাবালিকার সঙ্গে বেশ কয়েক মাস তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। মেয়েটি এতটাই ছোট যে, গোটা বিষয়টি সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারণাও নেই। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pregnancy Minor Girl police investigation arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy