Advertisement
E-Paper

কঙ্কাল কাণ্ডে পার্থের বিরুদ্ধে চার্জশিট শীঘ্রই

মানসিক রোগী হলেও কঙ্কাল কাণ্ডে পুলিশের হাত থেকে হয়তো নিস্তার পাবেন না রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে। লালবাজার সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি ৩ নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের বাসিন্দা পার্থের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে চলেছেন তদন্তকারীরা। গত ১০ জুন পার্থ়র বাবা অরবিন্দ দে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মারা যান। ১১ জুন পার্থদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলা ও দু’টি কুকুরের কঙ্কাল। জানা যায়, কঙ্কালটি পার্থর দিদি দেবযানী দে-র। কুকুর দু’টিও তাঁদের পোষ্য ছিল। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, তার মাস ছ’য়েক আগেই দেবযানী মারা গিয়েছিলেন।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩৭
পার্থ দে

পার্থ দে

মানসিক রোগী হলেও কঙ্কাল কাণ্ডে পুলিশের হাত থেকে হয়তো নিস্তার পাবেন না রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে। লালবাজার সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি ৩ নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের বাসিন্দা পার্থের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে চলেছেন তদন্তকারীরা। গত ১০ জুন পার্থ়র বাবা অরবিন্দ দে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মারা যান। ১১ জুন পার্থদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলা ও দু’টি কুকুরের কঙ্কাল। জানা যায়, কঙ্কালটি পার্থর দিদি দেবযানী দে-র। কুকুর দু’টিও তাঁদের পোষ্য ছিল। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, তার মাস ছ’য়েক আগেই দেবযানী মারা গিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি দিদি দেবযানীকে খুন করেছিলেন পার্থ? সেই কারণেই চার্জশিট?

পুলিশকর্তারা বলছেন, তা নয়। দেবযানী নিজেই অনাহারে থেকে মারা যান। পার্থ দিদির মৃত্যুর কথা পুলিশকে জানাননি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, এটা অপরাধ। দেহ সৎকার না করে বাড়িতেই রেখে দিয়েছিলেন। ফলে দেহ পচে কঙ্কাল হয়েছিল। আইনের চোখে, এটাও অপরাধ। কারণ, পচা দেহ থেকে এলাকায় বিপজ্জনক রোগ ছড়াতে পারত। এক পুলিশ কর্তার কথায় ‘‘ঘটনার পরে পার্থর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৬ এবং ২৬৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল। চার্জশিটেও ওই দুই ধারাতেই অভিযুক্ত করা হতে পারে পার্থ দে-কে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিনসন কাণ্ডের মতো স্পর্শকাতর এবং আলোচিত ঘটনায় চার্জশিট কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নির্ভর করছে লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের উপরে। চার্জশিটের প্রতিলিপি শীর্ষ কর্তারা দেখার পর চূড়ান্ত করা হবে। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মুরলীধর শর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘তদন্ত শেষ হয়নি। চার্জশিটের ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’

কলকাতা পুলিশের অফিসারদের একাংশ জানিয়েছেন, ওই বাড়ি থেকে কঙ্কাল উদ্ধারের পর পুলিশ নিজে থেকেই ওই দু’টি ধারায় মামলা দায়ের করেছিল পার্থ দের বিরুদ্ধে। এর পরে পার্থর বিরুদ্ধে চার্জশিট না-দেওয়া হলে ধরে নিতে হবে পুলিশের নিজের দায়ের করা মামলাটিই ভুল ছিল।

কঙ্কাল উদ্ধারের পরেই পার্থর মানসিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তাঁর উদ্ধার করা ডায়েরি, চিরকুট পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন তদন্তকারীরা। শেষ পর্যন্ত পার্থর মনোবিশ্লেষণের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে এক জন ফরেন্সিক-মনোবিদকে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মনোবিদ পার্থর সঙ্গে ১৬ ঘণ্টা কথা বলেন। তার ভিত্তিতে ৬৫ পাতার একটি রিপোর্টও পুলিশকে দিয়েছেন তিনি। তবে চার্জশিটে ওই রিপোর্ট দেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে পুলিশের স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।

যে দুটি ধারায় পুলিশ কঙ্কাল কাণ্ডে চার্জশিট দেওয়ার কথা ভাবছে তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে কী সাজা হতে পারে? আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, ওই দুটি ধারায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তের ছ’মাসের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। অথবা শুধুমাত্র জরিমানাও করা হতে পারে অভিযুক্তকে।

ঘটনার পরে পার্থকে পাভলভ মানসিক হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করায় পুলিশ। আড়াই মাস পাভলভে থেকে চিকিৎসার পরে সেখানকার চিকিৎসকদের পার্থ জানান, ওই বাড়িতে ফেরার কথা ভাবলে রীতিমতো ভয় করছে তাঁর। পরে পার্থর জায়গা হয় মাদার হাউসে। রবিনসন স্ট্রিটের পার্থদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি দেবযানীরই কি না, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ওই কঙ্কালটি চণ্ডীগড়ে পাঠায়। সেখানে সুপারইম্পোজ করা হয় কঙ্কালের। চণ্ডীগড়ের বিশেষজ্ঞেরা সুপারইম্পোজ করে জানান, সে’টি দেবযানীরই। তার পরে কঙ্কালটির সৎকার করা হয়েছে। তবে আদালতে নমুনা হিসেবে দেবযানীর করোটিটি সংরক্ষণ করা হয়েছে।

partha dey charge sheet police shibaji dey sarkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy