সচরাচর রাতের দিকে লালবাজারে থাকেন না পুলিশের বড়কর্তারা। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে পরিস্থিতি পুরো বদলে যায়। শহরে একটি দুষ্কৃতী দল ঢুকছে ডাকাতির জন্য এই খবর পেয়ে লালবাজারের বসে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার নজরদারি এবং তল্লাশির তদারকি করলেন স্বয়ং পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সঙ্গে ছিলেন পুলিশের বাকি বড়কর্তারাও।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই নাকা তল্লাশিতে শহরের দু’জায়গা থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে তপন দাস এবং প্রদীপ মণ্ডল নামে দু’জন উত্তর ২৪ পরগনার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে পরিচিত। তাদের কাছ থেকে মাদকও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে ফজেহার আলি দর্জির বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে আচমকাই বড়কর্তাদের কাছে খবর আসে চাঁদনি চক এলাকায় উত্তর ২৪ পরগনার একটি দুষ্কৃতী দল শহরে ডাকাতি করবে। গত কয়েক মাসে শহরের বুকে বেনিয়াপুকুর এবং জোড়াবাগান এলাকায় পরপর দু’টি ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও তার কিনারা হয়নি। তার মধ্যেই ফের ডাকাত দল হানা দেবে, এমন খবর মেলার পরেই নড়েচড়ে বসেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। লালবাজারে পৌঁছে যান স্বয়ং পুলিশ কমিশনার। কলকাতা পুলিশের উত্তর ডিভিশন, মধ্য ডিভিশন এবং ইএসডি ডিভিশনের সব থানাকেই সর্তক করা হয় ওই ডাকাত দল সম্পর্কে। সেই সঙ্গে প্রতিটি থানার আধিকারিকদের কাছে লালবাজার থেকে নির্দেশ যায় নিজের নিজের এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালানোর। বি টি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এ পি সি রোড-সহ শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে শুরু হয় নজরদারি ও তল্লাশি। পুলিশ জানায়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি এবং তল্লাশির পাশাপাশি ঘিরে ফেলা হয়েছিল চাঁদনি চকের ওই এলাকা। বছর খানেক আগে চাঁদনি চকে ওই এলাকাতেই কাবুলিওয়ালাদের বেঁধে রেখে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল।
পুলিশের একাংশের মতে, শহরের বুকে পরপর ঘটা দু’টি বড়সড় ডাকাতির কিনারা হয়নি। তাই দুষ্কৃতী দল হানা দিতে পারে এই খবর মেলার পর কোন ঝুঁকি নেননি লালবাজারের কর্তারা। খোদ কমিশনার নিজেই তদারকি করতে থাকেন নিরাপত্তার।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে কোথায় কোথায় ওই দলটি অপরাধ করেছে তা জানার পাশাপাশি বেনিয়াপুকুর ও জোড়াবাগানের ঘটনা নিয়ে জানতে চাওয়া হবে।
তদন্তকারীদের অনুমান, বেনিয়াপুকুরের সোনা ঋণদান সংস্থায় ডাকাতির সঙ্গে ভিন্ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের বেশ কয়েক জন জড়িত। কলকাতায় স্থানীয় কারও সূত্রে তারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ইতিমধ্যেই ভিন্ রাজ্যের একাধিক জায়গাতে হানা দিলেও ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজ পাননি গোয়েন্দারা। জোড়াবাগানের ডাকাতিতেও ভিন্ রাজ্যের দুষ্কৃতীরা জড়িত। তদন্তকারীদের দাবি, দু’টি ঘটনা আলাদা দলের কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy