দক্ষিণ কলকাতার এক সময়ের ত্রাস, টালিগঞ্জ এলাকার ডন শ্রীধর দাসকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শ্রীধরের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় শুভজিৎ সমাদ্দার নামে এক যুবককে। শুভজিৎ ওই এলাকার একটি নামী পুরনো পুজোর সম্পাদক। ধৃতদের বিরুদ্ধে শ্নীলতাহানি এবং বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। শ্রীধরের সঙ্গীদের অভিযোগ, গোটাটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। তাঁদের দাবি, দুর্গাপুজো নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর এলাকাতেই বিজেপির সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে পুলিশ নিয়ে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল।
রাসবিহারী এলাকার বাসিন্দাদের ইঙ্গিত, ক’দিন আগেও শ্রীধর শাসক দল এবং দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়ের অনুগত থাকলেও, খুব সম্প্রতি পদ্ম শিবিরের দিকে পা বাড়িয়েছিল। শুভজিৎ এলাকায় শ্রীধরেরই খাস লোক হিসাবে পরিচিত। তৃণমূলেরই এক যুবনেতা বলেন, ‘‘শ্রীধরকে চাবি হিসাবে ব্যবহার করেই বিজেপি এলাকার একটি পুরনো পুজোর দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল।” তবে কি সে কারণেই গ্রেফতার? এ প্রশ্নের আর জবাব দেননি ওই নেতা।
যুবনেতা যে পুজোর কথা বলছেন, সেটা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরে রাসবিহারীর ‘আদি দক্ষিণ কলকাতা বারোয়ারি সমিতি’র পুজো। ৯১ বছরের পুরনো এই বারোয়ারি। শুভজিৎ ওই পুজো কমিটির এ বারের সম্পাদক। গত বছর খুঁটি পুজো থেকে শুরু করে উদ্ধোধন— মঞ্চ আলো করে থেকেছেন দক্ষিণ কলকাতার তাবড় তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা। সাংসদ মালা রায় এই পুজোর অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। এলাকার বাসিন্দারা জানেন, রাস্তা দখল করে হওয়া ওই পুজো নিয়ে এক বার পুলিশ সমস্যা তৈরি করলে, তার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছিলেন খোদ দলনেত্রী। কিন্তু এ বার সেখানেই ভিন্ন চিত্র। গত রবিবার ওই বারোয়ারির খুঁটি পুজো হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওই এলাকার বিজেপি নেতা অজয় অগ্নিহোত্রী। পেশায় আইনজীবী অজয় এ বার পুজো কমিটির সভাপতিও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে খুঁটি পুজোর দু’দিন পর অর্থাৎ মঙ্গলবার পুজো কমিটির অফিসে বৈঠক করতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে।