নিজেকে কলকাতা পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর বলে দাবি করেছিল সে। দেখিয়েছিল ভুয়ো পরিচয়পত্রও। আর তার পরেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাকে মোটা টাকা দিলেই রাজ্য পুলিশের চাকরি বাঁধা। এ ভাবেই তিন জনের থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল সে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হয়েছে রনি দাস নামে ওই যুবক। পুলিশ জানায়, বছর আঠেরোর রনি হরিদেবপুরের চন্দ্রপল্লির খান মহম্মদ রোডের বাসিন্দা। সেখানেই ধরা হয় তাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পর্ণশ্রীর বাসিন্দা অমিত দাস বিশ্বাস শুক্রবার রাতে থানায় অভিযোগ করেন, তাঁকে এবং আরও দু’জনকে রাজ্য পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা চায় রনি। তবে এত সহজে চাকরি হয়ে যাবে, এমনটা প্রথমে বিশ্বাস করেননি অমিতবাবু। কিন্তু তার পরেই রনি নিজেকে কলকাতা পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর পরিচয় দিয়ে একটি ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখায় তাঁকে। সে জানায়, কলকাতা পুলিশের সবই তার হাতের মুঠোয়। এমনকী সে এ-ও জানায়, দক্ষিণ শহরতলির একটি থানার ওসিকে সম্প্রতি বদলি করে তার কথাতেই লালবাজারের এক পুলিশকে সেখানে নিয়োগ করা হচ্ছে। রনির কথা বলার ভঙ্গিই অমিতবাবুর মনে বিশ্বাস জাগিয়েছিল এবং তার উপর ভরসা করে ওই টাকা দেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, রনির বাবা রঞ্জিতবাবুর গড়িয়ায় গাড়ি মেরামতির ব্যবসা রয়েছে। পুলিশ জেনেছে, রনির পরিবারে কোনও আর্থিক অনটন নেই। তবে কী কারণে সে ওই টাকা নেয়, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কী ভাবে সে কলকাতা পুলিশের ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া, এই ঘটনায় কোনও পুলিশ জড়িত কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অমিতবাবুর সঙ্গে বেশ কয়েক মাস আগে বেহালার একটি চায়ের দোকানে পরিচয় হয় রনির। প্রথম দেখাতেই অমিতবাবুকে কথার জালে জড়িয়ে ফেলে সে। এর পরে বেশ কয়েকবার তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় দেখা করে সে। একের পর এক প্রতিশ্রুতির পরে অমিতবাবু তাকে এতটাই বিশ্বাস করে ফেলেন যে আরও দু’জন ব্যক্তিকে রনির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁদেরও একই ভাবে ফাঁদে ফেলে রনি। এর কিছু দিন পরে বেহালা থানার কাছ থেকে অমিতবাবুরা রনিকে ওই টাকা দেন। কিন্তু এর পর থেকেই রনির সঙ্গে বেশ কয়েক বার দেখা করতে চেয়েও তার দেখা পাননি অমিতবাবুরা। কয়েক দিন আগে দেখা হলেও চাকরির বিষয়ে কথা বলতেই রনির কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। সন্দেহ হওয়ায় শুক্রবার রাতে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ করেন অমিতবাবু। তার ভিত্তিতেই রনিকে ধরে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy