‘উদারতা’: উৎসবের শহরে পরোয়া নেই হেলমেটের। পুলিশ শুধুই দর্শক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
পাশাপাশি দু’টি মোটরবাইকে তিন জন করে সওয়ারি। কারও মাথায় হেলমেট নেই। পার্ক স্ট্রিটের কাছে মেয়ো রোডের মোড় দিয়ে হুস করে বেরিয়ে গেল সেই মোটরবাইক।
লালবাজার থেকেই নির্দেশ এসেছিল, হেলমেট পরা না থাকলেও দোল ও হোলিতে ছাড় দিতে হবে। রবি ও সোমবার তাই দেদার বাইক ঘুরে বেড়িয়েছে রাস্তায়, আরোহীরা ছিলেন হেলমেট ছাড়াই। দেখতে পেয়ে সেই বাইক দাঁড়ও করিয়েছে পুলিশ। ধমক বা জরিমানার বদলে একগাল মিষ্টি হেসে বুঝিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দোল এবং হোলির এই দু’দিন হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের ছাড় দিতে মৌখিক নির্দেশ এসেছিল লালবাজার থেকেই। বলা হয়েছিল, হেলমেটহীন বা বেশি আরোহী নিয়ে চলা বাইক দেখলে দাঁড় করিয়ে শুধু হেলমেট পরার প্রয়োজনীয়তা বোঝাবেন।
কেন এই গাঁধীগিরি? পুলিশকর্তাদের যুক্তি, ‘‘হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালালে জরিমানা ছাড়া পুলিশের আর কিছুই করার থাকে না। আর জরিমানার অঙ্কও এতই কম যে সেটা গায়ে মাখেন না অনেকে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ট্র্যাফিক কর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই কমিশনার রাজীব কুমার হেলমেটহীন আরোহীদের বিরুদ্ধে মামলা বা ফাইন করার বদলে কাউন্সেলিংয়ের উপরে জোর দিতে বলেছিলেন। লালবাজারের একাংশের দাবি, এর পর থেকেই বিশেষ করে উৎসবের দিনগুলিতে পুলিশ হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের প্রতি উদার হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু উৎসবে বা ফাঁকা রাস্তা পেলে তো বেপরোয়া বাইকের দাপাদাপি বেড়ে যায়! সেখানে পুলিশের এই গাঁধীগিরি আইনভঙ্গকারীদের কি আরও ইন্ধন যোগাবে না? গত বছর দোলের দিনই শহরে বাইক দুর্ঘটনায় তিন জন মারা যান। আহত হন ১২ জন। তার পরেও কেন পুলিশ এ বার ছেড়ে দিল বেপরোয়া আইনভঙ্গকারীদের?
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, হেলমেটহীন বাইকচালকদের বোঝালেও যাঁরা হেলমেট না পরে বাইক নিয়ে দাপাদাপি করবেন বা বেপরোয়া চালাবেন, সেটা সহ্য করা হবে না। আগের মতোই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালবাজারের কর্তাদের দাবি, এ বারও যাঁরা বাইকে বেপরোয়া ভাবে দু’জন বা তাঁর বেশি আরোহী নিয়ে শহর দাপিয়েছেন, তাঁদের ছাড় দেওয়া হয়নি। দোল এবং হোলি— দু’দিনই এমন প্রায় ২০০ জন বেপরোয়া বাইক আরোহীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। দুর্ঘটনা ঘটেছে দু’টি। তাতে আহত হয়েছেন তিন জন ব্যক্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy