Advertisement
E-Paper

ছবি দেখিয়ে সঙ্গিনীকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন রাকেশ! সুইসাইড নোট ঘেঁটে লেক গার্ডেন্সকাণ্ডে তথ্য পেল পুলিশ

ছেলেটির কাছ থেকে পাঁচ পাতার সুইসাইড নোট মিলেছে। রোমান হরফে বাংলায় লেখা রয়েছে সেই নোট। সেখানে এমন অনেক কথা রয়েছে, যার সঙ্গে বাস্তবের মিল পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৮

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

লেক গার্ডেন্স গুলিকাণ্ডে নিহত তরুণ তাঁর সঙ্গিনীকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন। দু’জনের একসঙ্গে ছবি দেখিয়ে তরুণীকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, রাকেশকুমার শাহ নামের তরুণ ওই তরুণীকে শেষ বার দেখা করার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তার পরে পরে আর কখনও কিছু বলবেন না। সে কারণেই লেকগার্ডেন্সের হোটেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন তরুণী বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই যুগলের মধ্যে আগেও ঝামেলা হয়েছিল। ছেলেটির কাছ থেকে পাঁচ পাতার সুইসাইড নোট মিলেছে। রোমান হরফে বাংলায় লেখা রয়েছে সেই নোট। সেখানে এমন অনেক কথা রয়েছে, যার সঙ্গে বাস্তবের মিল পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। নোটে লেখা ছিল, ‘‘স্থানীয় থানায় জানিয়ে এসেছি।’’ তরুণীকে নিজের স্ত্রী বলেও উল্লেখ করেছেন যুবক। যদিও পুলিশ তদন্তে নেমে জেনেছে, রাকেশের সঙ্গে তরুণীর বিয়ে হয়নি। থানাতেও জানাননি তিনি।

লেক গার্ডেন্সের হোটেলে যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল, তা মুঙ্গেরে তৈরি বলে মনে করছে পুলিশ। সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, ‘গঙ্গাধর’-এর থেকে সেটি পেয়েছেন তিনি। এটি গঙ্গার ধার থেকে পেয়েছেন নাকি গঙ্গাধর নামে কোনও ব্যক্তির থেকে, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তারা মনে করছে, ভুলপথে চালিত করার জন্য এ সব লেখা হতে পারে।

বুধবার বিকেলে লেক গার্ডেন্সের একটি অতিথিশালায় সঙ্গিনীর পেটে গুলি চালিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালান রাকেশ। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে গিয়ে তরুণীর সঙ্গে কথা বলে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে দূরত্বের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে তাঁরা এ-ও জেনেছেন যে, ওই তরুণীকে লেক গার্ডেন্সে আসার জন্য এক রকম জোর করেছিলেন রাকেশ। তাঁদের সম্পর্কে দূরত্ব কেন তৈরি হল, কেনই বা জোর করে প্রেমিকাকে ডেকে পাঠিয়ে গুলি করলেন রাকেশ, সেই সব প্রশ্নের জবাব খুঁজছিল পুলিশ। অবশেষে ওই ঘটনার ‘মিসিং লিঙ্ক’ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। দু’জনের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি টের পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তাঁর কারণেই সঙ্গিনীর সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল রাকেশের। ‘সুইসাইড নোট’ থেকে বিভিন্ন সূত্র জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণীর সঙ্গে সম্প্রতি অন্য এক যুবকের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। যা পছন্দ করছিলেন না রাকেশ। দু’জনের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। এমনকি, রাকেশ এ-ও আশঙ্কা করছিলেন যে, ওই তৃতীয় ব্যক্তির জন্য তাঁর সঙ্গিনী তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন। পুলিশের ধারণা, ওই আশঙ্কা থেকেই বুধবার প্রেমিকাকে ডেকে সরাসরি কথা বলেন রাকেশ। যা গড়ায় বচসায়। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ‘সুইসাইড নোট’টি তদন্তকারীরা উদ্ধার করেছেন, সেটি ছিল রাকেশের ব্যাগের মধ্যে। যা থেকে পুলিশের ধারণা, পূর্বপরিকল্পনা করেই ওই ‘সুইসাইড নোট’ লিখে লেক গার্ডেন্সের ওই হোটেলে অস্ত্র নিয়ে পৌঁছেছিলেন রাকেশ। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ তেমনই বলছে। কারণ, প্রেমিকাকে গুলি করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হন রাকেশ। ওই সময়ের মধ্যে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে নিজের ব্যাগে রাখা সম্ভব নয় বলেই মত তদন্তকারীদের। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

Guest House shot
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy