প্রার্থনার রং। রবিবার ব্যারাকপুরের আতপুর ঘাটে ছবিটি তুলেছেন সজল চট্টোপাধ্যায়।
গঙ্গার ধার বরাবর ৩২টি ঘাটে সকাল থেকেই টানটান নজরদারি।
দুর্গাপুজো, কালীপুজোর বিসর্জনে পুলিশ যেমন নজরদারি রাখে, এখন ছটপুজোয় তার থেকেও বেশি নজর রাখতে হয়। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রবিবার প্রায় প্রতিটি ঘাটেই উপচে প়ড়া ভিড়। বিশেষত স্নানঘাট লাগোয়া ফেরিঘাটগুলোয় অস্থায়ী জেটি হওয়ার কারণে ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে গঙ্গার ধার বরাবর ৩২টি ঘাটেই পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ থাকছেন প্রায় তিনশো জন। এ ছাড়াও টহলদারি পুলিশ ভ্যান এবং আর এফ এস (রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড)-কেও ঘাটের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যারাকপুরের কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ছটপুজো যাতে নির্বিঘ্নে কাটে, সে দিকে নজর আছে।’’
মূলত চটশিল্পের জন্য চিহ্নিত এই শিল্পাঞ্চলে স্বাধীনতার আগে থেকেই বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ-সহ ভিন্ রাজ্যের মানুষের বসত। পরিবারগুলির শাখাপ্রশাখা বিস্তার হতে হতে সংখ্যাটা বিপুল আকার ধারণ করেছে। ছটপুজোর সময়ে বরাহনগর থেকে বীজপুর পর্যন্ত রাস্তার দুধারে অস্থায়ী বাজারের ভিড় দেখলেই তা মালুম হয়। কয়েক লক্ষ কলার কাঁদি, নারকেল ম্যাটাডর বোঝাই হয়ে আসে।
রবিবারের বাজারেও তাই ছিল আগুন ছোঁয়া দাম। ছোট এক কাঁদি কলা পাঁচশো টাকা। বড় কাঁদি সাতশো। নারকেল প্রতি পিস চল্লিশ টাকায় বিকিয়েছে সকালে। ব্যারাকপুর সদর বাজারের বাসিন্দা সুহানা ঝা বলেন, ‘‘পুজো তো বছরে এক দিনই। দাম বাড়লেও কিনতেই হয়। কিন্তু এই ভিড় নিয়ন্ত্রণে মহিলা পুলিশের সংখ্যা আরও বাড়ালে আমাদের সুবিধা হয়।’’
গঙ্গার ঘাটগুলোতে সবচেয়ে বড় সমস্যা স্নান করে আসার পর পোশাক বদলের ঘর না থাকা। ফলে অস্বস্তি সত্ত্বেও খোলা জায়গাতেই পোশাক বদলাতে বাধ্য হন পুজো দিতে আসা মহিলারা। এ দিনও যেমন গঙ্গায় পুজো করে স্নান সেরে কোনও মতে পোশাক পরিবর্তন করেছেন রানি চতুর্বেদী, সোনম সিংহরা। ঘাটে উঠে এসে তাঁরা বললেন, ‘‘গঙ্গাসাগরে যেমন পোশাক বদলানোর জন্য হোগলাপাতার অস্থায়ী ঘর করে দেওয়া হয়, আমাদের এখানেও তেমনটা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’’
এ দিনই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে দলীয় বৈঠকে এসেছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পোশাক বদল নিয়ে মহিলাদের এই সমস্যা ও আর্জির কথা জানানো হয় তাঁকে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy