E-Paper

মনোজিৎকে বিঁধে চার্জশিটে ডিএনএ অস্ত্র

আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম‍্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের ছাত্রীর গণধর্ষণের মামলার চার্জশিট ও তথ‍্যপ্রমাণের নথি জমা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৩৮

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ছাত্রীর গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের ভূমিকা ডিএনএ রিপোর্টে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বলে আদালতে চার্জশিট পেশ করে দাবি করল পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার মামলার চার্জশিটে দাবি করেছেন, নির্যাতিতার পোশাক থেকে সংগৃহীত রক্তের নমুনা এবং মনোজিতের শরীরের রক্ত নমুনার ডিএনএ রিপোর্ট মিলে গিয়েছে। ধর্ষণের সময়ে মনোজিতের গায়ে একাধিক ক্ষত সৃষ্টির কথা তদন্তে উঠে আসে। মনোজিৎ এবং নির্যাতিতা দু’জনেরই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ। তা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় ঘটনাস্থলে দু’জনের উপস্থিতিই প্রমাণ হচ্ছে বলে চার্জশিটে তদন্তকারীরা দাবি উঠে করেছেন।

আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম‍্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের ছাত্রীর গণধর্ষণের মামলার চার্জশিট ও তথ‍্যপ্রমাণের নথি জমা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। গত ২৫ জুন কসবার ওই আইন কলেজে প্রভাবশালী প্রাক্তনী, শাসক দলের দাপুটে প্রাক্তন ছাত্রনেতা তথা কলেজের অস্থায়ী কর্মী মনোজিৎ মিশ্র ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এ-ও অভিযোগ, সেই কাজে সহযোগিতা করেছিল আরও দুই ছাত্র প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জ়ইব আহমেদ এবং নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদেরও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তদন্তকারী অফিসারের দাবি, ওই ঘটনায় কলেজের সিসি ক‍্যামেরা, কলেজের বাইরে একটি গয়নার দোকান ও মদের দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়ে অপরাধের তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। সেই রিপোর্টে নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রী, মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ, তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই কলেজ ছাত্র প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং জ়ইব আহমেদের রাতে কলেজে থাকার বিষয়টি প্রমাণিত বলে পুলিশের দাবি। কলেজের ভিতরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলেও দাবি করছে পুলিশ। তদন্তে প্রকাশ, মনোজিৎ ঘরের দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করেছিলেন। বাইরে প্রমিত, জ়ইবরা পাহারা দিচ্ছিলেন। তদন্তকারী অফিসারের দাবি, তিন অভিযুক্তের মোবাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টও হাতে এসেছে। মোবাইল ফোন ও সিসিটিভির ফুটেজের সূত্রে অভিযোগকারিণী ছাত্রীকে প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে হেনস্থা, তাঁর বন্ধুকে প্রাণে মারার শাসানিও প্রমাণিত বলে দাবি করা হচ্ছে।

তদন্তকারী অফিসারের দাবি, নির্যাতিতা অসুস্থ বোধ করায় প্রমিত ও জ়ইব সে দিন একটি ওষুধের দোকান থেকে ‘ইনহেলার’ কিনে আনেন। সেই দোকানের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ, সব জেনেও তাঁর নীরবতা নিয়ে চার্জশিটে আঙুল উঠেছে। ওই রক্ষী মনোজিৎ ও তাঁর সঙ্গীদের কার্যত সাহায্য করেন বলেও পুলিশের দাবি। তবে চার অভিযুক্তের মোবাইলের কথোপকথনের কণ্ঠস্বরের নমুনার ফরেন্সিক রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সিসি ক‍্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চার অভিযুক্তের হাঁটাচলার ভঙ্গি বা ‘গেট প্যাটার্ন’ রিপোর্টও এখনও মেলেনি বলে তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

South Calcutta Law College Kasba Rape Case police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy