E-Paper

নাবালিকার প্রসব, ধর্ষণ হয়েছে সন্দেহে অপরাধীর খোঁজ পেতে উদ্যোগ

গত শুক্রবার বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ওই নাবালিকার প্রসব হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, ওই দিন খুব ভোরে তাঁদের কাছে খবর আসে যে, মেয়েটির প্রসব-যন্ত্রণা শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ০৭:০৬
আপাতত মা ও তার শিশুকন্যা ভর্তি বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে।

আপাতত মা ও তার শিশুকন্যা ভর্তি বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। —প্রতীকী চিত্র।

প্রসূতিদের খোঁজখবর নিতে গিয়ে উত্তর শহরতলির একটি এলাকায় বছর বারোর এক অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার হদিস পেয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তখনই তার প্রসবের সময় এগিয়ে এসেছিল। দিনকয়েক আগে সেই নাবালিকা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে। এলাকার
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ভয়ে সে মুখ খুলছে না। ঘটনার তদন্ত করে দেখতে উত্তর ২৪ পরগনার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি, বিধাননগরের নগরপাল এবং উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি।

গত শুক্রবার বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ওই নাবালিকার প্রসব হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, ওই দিন খুব ভোরে তাঁদের কাছে খবর আসে যে, মেয়েটির প্রসব-যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। খবর পেয়ে তাঁরা তাকে নিয়ে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ছোটেন। সেখানে সকালে নাবালিকার প্রসব হয়। আপাতত মা ও তার শিশুকন্যা সেখানেই ভর্তি। মেয়েটির প্রতিবেশীরা জানান, সে তার সৎবাবার সঙ্গে থাকে। পুরপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেও ঘটনা সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি বলেই বাসিন্দাদের দাবি। প্রসবের পরে আপাতত নাবালিকা ও তার সন্তানকে হাসপাতালেই রেখে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পকসো আইন মেনেই ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হবে। নাবালিকা যাতে হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।

নাবালিকার বাড়ি যেখানে, সেই ওয়ার্ডের দুই স্বাস্থ্যকর্মী মিঠু বিশ্বাস ও নমিতা রাজবংশী বাড়ি
বাড়ি ঘুরে প্রসূতিদের খবরাখবর নেওয়ার সময়ে ওই নাবালিকার খোঁজ পান। প্রতিবেশীরাই তাঁদের খবর দেন যে, মেয়েটি অসুস্থ। অনেক দিন বাড়ি থেকে বেরোয় না। সেই খবর জেনে ওই দুই স্বাস্থ্যকর্মী নাবালিকার বাড়ি গিয়ে তাকে পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন যে, সে সন্তানসম্ভবা। প্রসবের সময় এগিয়ে এসেছে।

ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, আচমকা প্রসব-যন্ত্রণা শুরু হলে নাবালিকার সমস্যা বাড়তে পারে ভেবে তাঁরা নিজেদের ফোন নম্বর তাকে দিয়ে আসেন। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘দুই স্বাস্থ্যকর্মীর তৎপরতায় মেয়েটির জীবন বেঁচেছে। তার ফোন পেয়ে ওই ভোরে মিঠু ও নমিতা মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন এবং প্রসব করান। তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। মেয়েটির এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে, সেটা সামনে আসা দরকার। আমি নগরপাল-সহ প্রশাসনের সব স্তরেই ঘটনাটি জানিয়েছি। মেয়েটি ভয়ে কাউকে কিছু বলছে না।’’

ওই দুই স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, প্রসব-যন্ত্রণা শুরু হলেও মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। আধার কার্ড সঙ্গে না থাকায় ওকে প্রথমে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নমিতা বলেন, ‘‘মেয়েটি বাড়ি ফিরে আমাকে ফোন করে। আমরা অটো নিয়ে ওর বাড়িতে যাই। তার পরে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে বলা হয়, চিকিৎসক নেই। আমরা পুরপ্রতিনিধিকে ঘটনাটি জানাই। উনি হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। প্রসবের সময়ে আমরা এবং হাসপাতালের এক জন নার্স ছিলেন। কোনও চিকিৎসক ছিলেন না।’’ যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, মেয়েটিকে ঠিক সময়েই ভর্তি করা হয়েছিল। তার পরিচয়পত্র দেখাটাও জরুরি ছিল। যে হেতু স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে, তাই কোনও চিকিৎসককে রাখা হয়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rape Bidhan Nagar municipality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy