প্রশ্ন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে প্রিজন ভ্যান। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজ স্ট্রিট চত্বরে পা রাখলে দেখা যাবে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে প্রিজন ভ্যান! কখনও একটি, কখনও বা দুটি। সঙ্গে আবার থাকছে পুলিশের জিপও! আর অদূরেই রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে কি সম্প্রতি বিক্ষোভে উত্তাল হওয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির কথা আঁচ করেই আগেভাগে ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে কলকাতা পুলিশ! অবশ্য এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ পুলিশের কর্তারা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন অর্ধেকের বেশি পড়ুয়া। আর তাঁদের পাশ করানোর দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে লাথি মারতেও কসুর করেননি বিক্ষোভকারীরা। তারপর থেকেই চর্চা শুরু হয়েছে, পড়ুয়াদের এহেন আচরণের মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক ফুটের ব্যবধানে প্রিজন ভ্যান রেখে দিয়ে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। যেমন এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সামনে যা হচ্ছে, তা দেখছেন না! সে সবের জন্যই তৈরি থাকা।’’ কিন্তু এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে চাননি কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) তথা ভারপ্রাপ্ত ডিসি (সেন্ট্রাল) মিতেশ জৈন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশি ব্যবস্থার অংশ হিসেবেই প্রিজন ভ্যান রাখা হয়েছে।’’
প্রিজন ভ্যান কখনও রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকের রাস্তায়। আবার কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের কাছেই। অনেকের মতে, গত জুন মাসের গোড়ায় কলেজ স্কোয়ার চত্বরে সভা-মিছিল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সময় থেকেই প্রিজন ভ্যান থাকছে। আবার কারও দাবি, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশি ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতানেত্রীদের দাবি, দেড়-দু’মাস ধরেই এখানে প্রিজন ভ্যান রাখা হয়েছে। কখনও কখনও মূল ফটকের সামনেও একাধিক পুলিশকর্মীকে দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে রাস্তায় প্রিজন ভ্যান দেখেছি। আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। এ সব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে পুলিশের কোনও কথা হয়নি।’’ যদিও কলেজ স্ট্রিটের এক বইয়ের দোকানের কর্মী অর্নিবাণ মজুমদারের দাবি, ‘‘যখন সভা-মিছিল বন্ধ করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই সময় থেকেই প্রিজন ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকে।’’ ঝালমুড়ি বিক্রেতা জয়প্রকাশ যাদবও সেই বক্তব্যকেই সমর্থন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রিজন ভ্যান থাকা উচিত নয় বলেই মত নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রিজন ভ্যান রাখা পড়ুয়াদের জন্য অপমানজনক।’’ ‘সাবধানী’ প্রতিক্রিয়া রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যয়ের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন রাখা হয়েছে জানি না। তবে আমাদের সময়ে এমন ঘটলে প্রতিক্রিয়া হত পড়ুয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে।’’ সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মতে, ‘‘গোটা রাজ্যেই পুলিশি রাজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy