Advertisement
০৪ মে ২০২৪
police

Motor vehicles: চোখ ধাঁধানো আলোর বিপদ বুঝে কড়া পুলিশ

আলো কী ভাবে উল্টো দিকের গাড়ির বিপদ বাড়িয়ে দেয়, গাড়ির মালিক ও চালকদের সে বিষয়ে সচেতনকরার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিপত্তি: শহরের রাতপথে গাড়ির এমন আলোই বাড়াচ্ছে চিন্তা।

বিপত্তি: শহরের রাতপথে গাড়ির এমন আলোই বাড়াচ্ছে চিন্তা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩২
Share: Save:

কখনও চোখে এসে পড়েছে রং-বেরঙের একাধিক আলো। কখনও গাঢ় একটিই রং। তার জেরেই চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে না

রাস্তা কোন দিকে বাঁক নিয়েছে বা সামনে কী আছে। গত কয়েক দিনে রাতপথের একাধিক দুর্ঘটনায় উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির এমনই আলোকে দায়ী করেছেন চালকেরা। তাঁদের অভিযোগ, সমস্যা বুঝিয়ে উল্টো দিকের চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ‘আপার-ডিপার’ (হেডলাইটের উপর ও নীচের দু’টি আলো একসঙ্গে জ্বালানো) করা হলেও সুরাহা হচ্ছে না। কখনও আবার তিনটি আলো এমন ভাবে বসানো হচ্ছে যে, বোঝাই যাচ্ছে না উল্টো দিক থেকে একটি মোটরবাইক আসছে? না কি কোনও তিন চাকার গাড়ি!

এ বার এই ধরনের আলো লাগানো গাড়ির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে কড়া হতে বলা হয়েছে। কোনও গাড়িতে এমন আলো দেখলে, তাকে দাঁড় করিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গাড়িতে বাইরে থেকে এমন আলো লাগানো হয়েছে মনে হলে, তৎক্ষণাৎ তা খুলিয়ে ফেলতেও বলা হয়েছে। এমন আলো কী ভাবে উল্টো দিকের গাড়ির বিপদ বাড়িয়ে দেয়, গাড়ির মালিক ও চালকদের সে বিষয়ে সচেতনকরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি যেখানে যেখানে গাড়ির এমন আলোর কাজ করানো হয়, সেখানেও পুলিশ হানা দিতে পারে বলে খবর। পুলিশেরই একাংশের বক্তব্য, এই আলো নতুন নয়। বহু ক্ষেত্রেই জরিমানার অঙ্ক কম হওয়ায় কারও হুঁশ ফেরে না।

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়িতে এই ধরনের ঝলমলে আলো লাগালে ‘ভায়োলেশন অব রেজিস্ট্রেশন’ এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মোটর ভেহিক্‌লস রুল’-এ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রথমটির ক্ষেত্রে ধরা হয়, রেজিস্ট্রেশনের নির্দেশ এ ক্ষেত্রে অমান্য করা হয়েছে।

যাতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকে, ট্র্যাফিক বিধি ভঙ্গ করে এমন কারুকার্য গাড়িতে করা চলবে না। কোম্পানি থেকে হেডলাইটের উপরে লাগিয়ে দেওয়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ঝলমলে আলোও তার মধ্যে পড়ে। এ ক্ষেত্রে মোটরযান আইনের ৩৯ নম্বর ধারায় মামলা এবং ১৯২ নম্বর ধারায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করতে
পারে পুলিশ। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মোটর ভেহিক্‌লস রুল’-এর ২৯৯ (১) নম্বর ধারায় মামলা করা যায়। এ ক্ষেত্রে মোটরযান আইনের ১৭৭ নম্বর ধারায় ১০০ টাকা জরিমানা করা হতে পারে।

ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্মী বলেন, ‘‘কোন ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা অপরাধের ধরনের উপরে নির্ভর করে। একই অপরাধে বার বার ধরা পড়লে জরিমানার
অঙ্ক বাড়তে পারে।’’ কিন্তু ভুক্তভোগীদের বড় অংশেরই দাবি,বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলে পুলিশ ১০০ টাকা জরিমানা করেই ছেড়ে দেয়। এ কারণেই অনেকের হুঁশ
ফেরে না।

বাসন্তী হাইওয়ের এমনই একটি দুর্ঘটনার কথা শোনাচ্ছিলেন ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক। তাঁর কথায়, ‘‘যে রাস্তায় আলো কম থাকে এবং ডিভাইডার থাকে না, সেখানেই বিপদ বেশি। এক রাস্তায় দ্বিমুখী গাড়ি চলার সময়ে চালকেরা বোঝেন না, কখন হাই-বিম আর কখন লো-বিম ব্যবহার করতে হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে ফেরার সময়ে এক গাড়িচালক এ ভাবেই উল্টো দিকের চালকের ভুলে কিছুই দেখতে পাননি। সোজা গাড়ি ঢুকিয়ে দেন নালায়। তিন জনের মৃত্যু হয়। কোনও মতে বেঁচে যাওয়া চালক জানান, সামনের গাড়ির চড়া আলোয় তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police Motor Vehicles Law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE