মুখ্যমন্ত্রী কিছু করুন, হস্টেলের দাবিতে আন্দোলনরত মেডিক্যালের প়ড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে এই দাবিই জানালেন সমাজের বিশিষ্টদের একাংশ।
রবিবার মেডিক্যাল কলেজে গণকনভেনশনের আয়োজন করে পড়ুয়ারা। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ সেই কনভেনশনে এসে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়ে যান। হাজির ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমনও। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর আবেদন, “মমতা দেখে যাও, প্লিজ দেখে যাও, ওঁরা তো আমাদেরই ছেলেমেয়ে।” অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রয়োজনে আমিও অনশনে বসে পড়তে পারতাম। অনেকে অনেক কথা বলবেন। আমি বিতর্ক চাই না। এ সব আমার ভাল লাগছে না। ওঁদের জন্যে কষ্ট হচ্ছে। তাই ছুটে চলে এলাম।”
রবিবার সকাল থেকেই ভিড় বাড়ছিল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সময় যত গড়িয়েছে, কালো মাথার সংখ্যা ততই বেড়েছে। বিকেলের দিকে স্রোতের মতো ঢুকেছে মানুষের মিছিল। চিকিৎসকেরা তো প্রথম থেকেই ছিলেন। কনভেনশনে হাজির ছিলেন চিত্রপরিচালক অনীক দত্ত, সঙ্গীতশিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র, নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন, বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, গায়ক পল্লব কীর্তনিয়া, চন্দ্রবিন্দু-র উপল, শিলাজিৎ-সহ অনেকে। শিলাজিতের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী তো সবার পাশে এসে দাঁড়ান। ওঁরা তো ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় সবই দেখছেন। কিছু একটা সমাধান হবে।”কনভেনশনের মাঝে অনশনরত পড়য়াদের পাশে বসে তাঁদের গান শোনান মৌসুমী ভৌমিক।
কী বললেন বিভাস চক্রবর্তী। দেখুন ভিডিয়ো
সকালেই ঘুরে গিয়েছিলেন সাংসদ মহম্মদ সেলিম। বিকেলে আসেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে জানতে চান। ছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অরুণাভ ঘোষ। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে, মেডিক্যালের এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন।
দুপুরের দিকে হাসপাতালে ঢোকেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি ছাত্রদের শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানতে চান। যদিও তিনি কলেজে আসায় কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। তাঁরা সরাসরি বিজেপি নেতাকে জানিয়ে দেন, “আপনি এসেছেন, ঠিক আছে। কিন্তু আপনার রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে আমাদের কোনও মিল নেই।”
আরও পড়ুন: ‘প্রতীকী’ অনশন তুলতে বললেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা, মেডিক্যালে জটিলতা বাড়ছে
এ দিন কলেজ স্কোয়্যার থেকে মিছিল করে প্রতিবাদ জানায় এস এফ আই। অনশনরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুরের পড়ুয়ারাও। তারাও এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন। ছিল এপিডিআরের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলিও।
কী বললেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। দেখুন ভিডিয়ো
রবিবার ১৩ দিনে পড়েছে অনশন। এখনও জট কাটার কোনও সম্ভাবনাই নেই। এরই মধ্যে যে ভাবে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের পাশে সমাজের বিশিষ্টজনেরা দাঁড়িয়েছেন, তাতে আন্দোলনের ঝাঁজ কয়েক গুণ বেড়েছে। সোমবার মেডিক্যাল কলেজ থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের।