Advertisement
১১ মে ২০২৪
Road Accident

গোঁজামিলের মেরামতিতে ‘তাপ্পি রোড’ যেন মরণফাঁদ

টাকি রোডে বারাসতের চাঁপাডালি থেকে গোলাবাড়ি পেট্রল পাম্প পর্যন্ত ন’কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

ভাঙাচোরা: টাকি রোডের বেহাল অবস্থা। সোমবার, কদম্বগাছি বাজারের কাছে।

ভাঙাচোরা: টাকি রোডের বেহাল অবস্থা। সোমবার, কদম্বগাছি বাজারের কাছে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ০৭:২২
Share: Save:

চার বছর কেটে গিয়েছে। এখনও ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে রাস্তা। সংস্কারের নতুন প্রকল্প আটকে রয়েছে অর্থ দফতরের ঘরে। এ দিকে, বর্ষার জল-কাদায় ওই রাস্তা যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ। মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। টাকি রোডে বারাসতের চাঁপাডালি থেকে গোলাবাড়ি পেট্রল পাম্প পর্যন্ত ন’কিলোমিটার রাস্তার এমন বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

চাঁপাডালি থেকে ওই রাস্তা গিয়েছে বাদুড়িয়া হয়ে একেবারে বাংলাদেশের কাছে ঘোজাডাঙা সীমান্ত পর্যন্ত। আংশিক লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে সংখ্যায় কম হলেও বেশ কিছু গাড়ি চলছে। কিন্তু টাকি রোডের ওই ন’কিলোমিটার অংশে গাড়ির গতি কমে যাওয়ায় রোজই প্রবল
যানজট হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত চার বছর ধরেই এমন পরিস্থিতি সেখানে। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘বর্ষাকালে বলা যায়, প্রাণ হাতে নিয়েই যাতায়াত করতে হয় আমাদের। রাস্তায় জল জমে থাকে। মাটি-বোঝাই লরি চলাচল করায়, সেই মাটি পড়ে কাদায় পিছল হয়ে থাকে রাস্তা। চলতে গেলে কাদা ছিটকে লাগে লোকজনের গায়ে। আবার অন্য সময়ে হাওয়ায় শুকনো মাটি উড়ে গিয়ে এলাকার দূষণ বাড়িয়ে তোলে।’’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে ভাঙা রাস্তায় তাপ্পি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘অনেকেই এখন মজা করে টাকি রোডকে তাপ্পি রোড বলে ডাকেন।’’ বর্ষায় প্রতি বছরই রাস্তা ভেঙে যায়। যার জেরে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানবাহনেরও প্রচুর ক্ষতি হয়। গর্ত বাঁচিয়ে রাস্তায় এঁকেবেঁকে চলতে গিয়ে মুখোমুখি দু’টি গাড়ি একে অন্যকে পাশ কাটানোর সময়েও সমস্যায় পড়ছে।

ওই রাস্তায় যে প্রতি বছরই তাপ্পি দেওয়া হচ্ছে, সেই অভিযোগ স্বীকার করেছে পূর্ত দফতরও। আধিকারিকেরা জানালেন, কিছু সমস্যার কারণেই ওই ন’কিলোমিটার অংশের আমূল সংস্কার করা যাচ্ছে না। যদিও পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওই রাস্তার জন্য ৪৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। অর্থ দফতরের কাছে তা মঞ্জুরের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই রাস্তা নতুন করে তৈরি করা হবে।’’

কিন্তু কেন এই অবস্থা?

পূর্ত দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে ওই রাস্তা চওড়া করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সেই মতো রাস্তার দু’পাশে থাকা গাছ ও বাতিস্তম্ভ সরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে উঠে সেই কাজ শুরু করতে প্রচুর সময় লেগে যায়। তত দিনে ঠিকাদার সংস্থা টাকি রোডের অন্য অংশের কাজ করে ফেলেছে। এবং সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তিও শেষ হয়ে গিয়েছে। যার জেরে চাঁপাডালি থেকে গোলাবাড়ি পর্যন্ত ন’কিলোমিটার রাস্তা ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার পর থেকেই ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে রাস্তার ওই অংশটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE