Advertisement
E-Paper

পোস্টার-ফেস্টুন নৈব চ কলেজে

অন্য নজির গড়ল দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজ| নিজেদের চত্বরকে ‘পোস্টার এবং থুতু মুক্ত জোন’ হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল। এ কাজে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পড়ুয়ারা পাশে পেয়েছেন কলকাতা পুরসভাকে।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:১৭
পরিচ্ছন্ন: বদলে যাওয়া কলেজ চত্বর। নিজস্ব চিত্র

পরিচ্ছন্ন: বদলে যাওয়া কলেজ চত্বর। নিজস্ব চিত্র

স্কুল থেকে রাস্তা-ফুটপাত সর্বত্রই সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। অথচ স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং বিভিন্ন সরকারি দফতরের দেওয়ালে ছেটানো রঙিন থুতু আর পোস্টারের চাপে সেই সৌন্দর্যায়ন কিছু দিনের মধ্যেই ম্রিয়মাণ। ‘বিজ্ঞাপন মারিবেন না’ এবং ‘পান-গুটখার পিক ফেলা নিষেধ’ এমন গোছের আবেদনও সে জায়গায় কাজে আসে না।

সেখানে অন্য নজির গড়ল দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজ| নিজেদের চত্বরকে ‘পোস্টার এবং থুতু মুক্ত জোন’ হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল। এ কাজে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পড়ুয়ারা পাশে পেয়েছেন কলকাতা পুরসভাকে।

পুরসভার ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলি এলাকার কে কে দাস কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এই কলেজে পড়ুয়া প্রায় তিন হাজার। সেখানে ঢুকলে কিন্তু কোথাও পোস্টার দেখা যাবে না। এমনকি কলেজের বাইরের দেওয়ালেও কেউ পোস্টার লাগালে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান কর্তৃপক্ষ। গোটা শহরে যেমন থানা, স্কুল, ফুটপাত, সেতু সর্বত্রই নীল-সাদা রঙে রাঙিয়ে তুলতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। এ কলেজও তেমন রঙেই সেজেছে। সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পোস্টারমুক্ত রাখার চ্যালেঞ্জটাও তারা নিয়েছে।

কলেজ কী ভাবে এই কড়া পদক্ষেপ নিল? কলেজের অধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, লিখিত কোনও নির্দেশ নেই। কিন্তু পড়ুয়া, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সকলকে একটি বৈঠকে ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, নিজেদের কলেজ নিজেদেরকেই পরিষ্কার রাখতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আনন্দের বিষয় যে, এতে সকলেই সাড়া দিয়েছেন। খুব প্রয়োজন হলে অস্থায়ী ভাবে ফেস্টুন ঝোলানো হয়। পরে তা খোলা হয়।’’

তবে শুধু পোস্টার মুক্ত করাই হয়নি| গোটা কলেজ চত্বরকে সাজানো হয়েছে। কলেজে গিয়ে দেখা গেল, সামনে বসেছে কারুকার্য করা চেয়ার, পেভার ব্লক ও ফোয়ারা।
নীল-সাদা রং তো রয়েছেই। পাশাপাশি কলেজের দেওয়ালে তুলে ধরা হয়েছে প্রাচীন কলকাতার নিদর্শন। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত জানান, এক বিঘা জায়গা নিয়ে কলেজটি| সামনের আরও এক বিঘা জমিতে বেশ কয়েকটি দোকান ঘর ছিল। তাদের পুনর্বাসন দিয়ে গোটা এলাকাটি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে সাজানো হয়।

দেওয়ালে বসানো ম্যুরাল। নিজস্ব চিত্র

কয়েক মাস আগে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পঠনপাঠনে উন্নয়নের পাশাপাশি স্কুল, কলেজের সৌন্দর্যায়নেও জোর দিতে বলেছিলেন। উদাহরণ হিসাবে বেসরকারি স্কুল কলেজের প্রসঙ্গ টেনেছিলেন তিনি। সে কথা মাথায় রেখেই দ্রুত এই সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। বছর খানেক আগে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের সিঁড়ির পাশে পান-গুটখার পিক ফেলা আটকাতে কোণে আল্পনা এঁকেছিলেন পড়ুয়ারা। এ বার এই কলেজকে দেখে শহরের অন্য স্কুল-কলেজও এমন কিছু করার কথা ভাববে বলে আশা করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ|

বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন-এর অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা ভাল উদ্যোগ। আমাদের কলেজেও পোস্টার লাগানো নিষেধ। সব কলেজগুলোরই উচিত এটা নিয়ম করা। ’’ জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যথেষ্ট ভাল উদ্যোগ। আমাদের কলেজেও এমন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তবে তা যে মানা হয়, তেমনটা নয়। এ বারে ফের সকলকে নিয়ে বসে সক্রিয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

College KK Das College Advertisement Prohibition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy